নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছে, ‘চতুর্থ বিপ্লবকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমাদের প্রস্ততি প্রয়োজন, অনেক গবেষণা প্রয়োজন এবং বিজ্ঞানীদের প্রণোদনা প্রয়োজন। আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেটি ব্যাপকভাবে বলেছি। আমাদের দেশে এখন চতুর্থ বিল্পব শুরু হতে যাচ্ছে, যে সময় অনেক দেশে পঞ্চম বিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে। এমন একটি সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অন্যরকম একটা বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ন্যানো সোসাইটির আয়োজনে “বঙ্গবন্ধুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাবনা ‘ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আমরা আর্থ ও সামাজিকভাবে অনেক উন্নতি করেছি, দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মাথাপিছু আয়ে, প্রবৃদ্ধি অর্জনে, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায়নে আমরা এখন ১ নম্বরে চলে গেছি এবং মাতৃ মৃত্যুহারও সবচেয়ে কম এখন আমাদের বাংলাদেশে। গত ১ যুগে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। আমি এটাকে বলি পরিকল্পনার যুগ, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সোনালি যুগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা তৈরি করেছি এবং মোটাদাগে সেভাবেই পরিকল্পনা গুলো বাস্তবায়িত হয়েছে। একটি সুপরিকল্পনা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে সম্পদের বণ্টন এবং বাজেটিং আমরা সেভাবেই করেছি এবং দ্রুত আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে গিয়েছি। দ্রুত প্রবৃদ্ধির কারণ হলো উপযুক্ত পরিকল্পনা আমাদের হাতে থাকা। উপযুক্ত দূর লক্ষ্য আমাদের সামনে থাকা। এ প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা প্রণয়নে আমি নেতৃত্ব দিয়েছি। শুধু ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নয় আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২০-২১ এবং ভিশন ২০৪১ এর ভিত্তিতে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করেছি। আগামী ৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ উন্নত দেশ হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবো। আমাদের সুনির্দিষ্ট পথচিত্র তৈরি করে রেখেছি। ক্রমান্বয়ে আমরা একটা উন্নত দেশের দিকে যাবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ বঙ্গবন্ধুর সুপরিকল্পিত উদ্যোগ ও সূদুর প্রসারী চিন্তা-ভাবনার কারণে আজকে আমরা এতদূর এগিয়ে যেতে পারছি। আজ কৃষির যতটুকুই উন্নয়ন, তার ভিত রচনা করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কৃষিতে ব্যাপক রুপান্তর ঘটাতে চেয়েছিলেন তিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কৃষিকে বিশেষ গুরত্ব দিয়ে থাকেন। কৃষি বিষয়ে কোন প্রজেক্ট তাঁর হাতে গেলে তিনি সেটি কখনোই ফিরিয়ে দেন না।’বাধা নেই। আপনারা কাজ করেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য সব সময়ই প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ন্যানোটেকনোলজির কার্যকরী চর্চা ও শিল্পে প্রয়োগ শুরু হওয়া দরকার। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উন্নত গবেষণা ও সরকারি উদ্যোগ।দেশের বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিগণকে ন্যানোটেকনোলজি বিষয়ে সংগঠিত হয়ে এর চর্চা ও শিল্পে প্রয়োগের পন্থা উদ্ভাবনের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইবিজিই এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও প্লান্ট বায়োটেকনোলজি ডিসিপ্লিন এর হেড অধ্যাপক ড. মো: তোফাজ্জল ইসলাম, কৃষি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার, বাংলাদেশে ন্যানো টেকনোলজি ইনস্টিটিউট তৈরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ন্যানো টেকনোলজির বেশিরভাগ সুবিধা হয়তো ভবিষ্যতের কয়েক দশকের মধ্যে দেখতে পাওয়া যাবে কিন্তু বর্তমানেও এই প্রযুক্তি নানান ভাবে আমাদের পৃথিবীকে পরিবর্তিত করতে সাহায্য করছে। আপনি হয়তো ভাবছেন ন্যানো টেকনোলজি একে বারে অসাধারণ জিনিষ এবং এটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি—কারণ “টেকনোলজি” বলতে আমরা মানুষের তৈরি টেকনিককেই মনে করি। কিন্তু আমাদের জীবন নিজে থেকেই ন্যানো টেকনোলজির এক বিরাট উদাহরণ। আমাদের শরীরে প্রোটিন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, কোষ ইত্যাদি ন্যানো টেকনোলজির সূত্রেই কাজ করে।
ন্যানো সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও এআইউবির সহযোগী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ মাহবুব রব্বানী সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.লুৎফুল হাসান। মূখ্য আলোচক বক্তব্য রাখেব চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সায়েন্টিস্ট এন্ড ডিরেক্টর ড. সেঁজুতি সাহা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ন্যানো সোসাইটির সভাপতি, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আল- নকীব চৌধুরী। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া সহ দেশ-বিদেশের ১৭৩ জন জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিবর্গ সংযুক্ত হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



