এতদিনেও চ্যাটজিপিটির নাম শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিছু কিছু কাজের জন্য চ্যাটজিপিটিসহ অন্যান্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাগুলো বেশ প্রশংসিতও হয়েছে। যেমন চিকিৎসা পরিস্থিতি নির্ণয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রের সারসংক্ষেপ করাসহ নানা অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সফল এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
কিন্তু এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিজস্ব বিচারবুদ্ধি নেই। আগে থেকে যেসব তথ্য ইনপুট দেওয়া আছে, সেগুলো থেকে যাচাই বাছাই করে উত্তর দেয়। এসব বুদ্ধিমত্তা আসলে কতটা কাজের? গাণিতিক ধাঁধা সমাধানে কতটা পারদর্শী এগুলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে যুক্তরাষ্ট্রের সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিন। চ্যাটজিপিটিকে তারা কিছু ধাঁধা সমাধান করতে বলে। ধাঁধার উত্তর দেখলে বোঝা যাবে, গাণিতিক দক্ষতায় কতটা পারদর্শী চ্যাটজিপিটি। ধাঁধাগুলো বিখ্যাত ধাঁধানির্মাতা মার্টিন গার্ডনারের তৈরি। ২০১০ সালে এই কিংবদন্তি লেখক মারা গেছেন।
চলুন, এমন তিনটি ধাঁধা দেখে নেওয়া যাক। এসব ধাঁধার উত্তরের পাশাপাশি জানার চেষ্টা করব, চ্যাটজিপিটি এ ধাঁধাগুলোর কী উত্তর দিয়েছিল। জানার চেষ্টা করব, কতটা সফল হয়েছিল চ্যাটজিপিটি।
একটি বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় তিনটি সুইচ আছে। সুইচগুলো অন বা অফ করে বাতি জ্বালানো ও নেভানো যায়। এর মধ্যে মাত্র একটি সুইচের সাহায্যে তৃতীয় তলায় একটি বাতি জ্বলে। বাকি দুটি সুইচের কোনো কাজ নেই। অর্থাৎ অকেজো। তিনটি সুইচের যেকোনো একটি চেপে বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় গিয়ে আপনি দেখবেন, বাতিটি জ্বলছে কি না। জ্বলুক বা না জ্বলুক, তৃতীয় তলায় থেকেই আপনার বলতে হবে, কোন সুইচটা আসলে কাজ করে। মনে রাখবেন, আপনি শুধু একবারই সুযোগ পাবেন।
এবার একটু থেমে নিজেই কল্পনা করুন, এ ধাঁধার সমাধান কী হতে পারে। তারপর চ্যাটজিপিটির উত্তরটা যাচাই করে দেখুন, সমাধান মনঃপূত হয় কি না। চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্নটা করার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিয়েছে এরকম—
প্রথমে প্রথম সুইচটা অন করতে হবে। কিছুক্ষণ পর, মানে চার-পাঁচ মিনিট পর প্রথম সুইচটা বন্ধ করে দ্বিতীয় সুইচটি চালু করেই চলে যেতে হবে তৃতীয় তলায়। গিয়ে যদি দেখেন বাতি জ্বলছে, তাহলে বুঝতে হবে দ্বিতীয় সুইচটি কার্যকর। আর যদি দেখেন, বাতি জ্বলছে না কিন্তু বাল্বটি গরম, তাহলে বুঝতে হবে প্রথম সুইচটি কার্যকর। কারণ আপনি যখন প্রথমে ওই সুইচটা চালু করেছিলেন, তাতে বাতি জ্বলেছিল এবং গরম হয়েছিল। কিন্তু যদি দেখেন, বাতি বন্ধ এবং ঠান্ডা, তাহলে বুঝতে হবে তৃতীয় সুইচটি কার্যকর।
এই উত্তরটি সঠিক। কিন্তু চ্যাটজিপিটি কীভাবে এই বুদ্ধিভিত্তিক ধাঁধার উত্তর দিল? এটি তো নিজে চিন্তা করতে পারে না। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞানী কেন্টারো তোয়ামা। তাঁর মতে, চ্যাটজিপিটি আগে থেকেই এ প্রশ্নের উত্তর জানত। তাকে যে পরিমাণ ডাটা ইনপুট দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে এটাও ছিল। স্বাভাবিক। ২০১৪ সালে এই সমাধানটি প্রকাশিত হয়েছিল সায়েন্টিফিক আমেরিকান-এই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।