ধানে দাম না পাওয়ায় গম চাষ: ব্যাপক লাভের আশা করছেন কুড়িগ্রামের কৃষকেরা
জুমবাংলা ডেস্ক: কুড়িগ্রামে গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। ধান চাষে দাম আশানুরূপ না পাওয়ায় দিন দিন গম চাষে ঝুঁকছেন এই অঞ্চলের চাষিরা। বর্তমান মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও ফলন ভাল হওয়ায় ব্যাপক লাভের আশা করছেন এই এলাকার কৃষকেরা। বাংলা ভিশনের প্রতিবেদক শফিকুল ইসলাম বেবু-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
কুড়িগ্রাম কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবার জেলায় গম চাষের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে।
টানা কয়েক বছর ধরে গমের ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামে ব্যাপক পরিমানে গমের চাষাবাদ করেছে প্রান্তিক চাষিরা। মুলত এ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত কৃষির উপর নির্ভরশীল। গম চাষের পাশাপাশি সারা বছর এ অঞ্চলের চাষিরা বিভিন্ন ধরণের ফসল ফলে জীবন-জীবিকার নির্বাহ করেন।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কৃষকের বিস্তৃত মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো এক সবুজের সমারোহ। নাগেরশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা,সন্তোষপুর, সদর উপজেলার যাত্রাপুর,ঘোগাদহ ও হলোখানা,চিলমারী উপজেলার অষ্টমিরচর,নয়ারহাট এবং রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ডাঙ্গা ইউনিয়নে দেখা যায় চারিদিকে কৃষকদের মাঠ জুড়ে গমের সবুজ রঙে ভরে গেছে। ফসলের মাঠ জুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ। নয়ন জুড়ানো দৃশ্য মেতে উঠেছে ফসলের মাঠে। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলিছে প্রকৃতির এক অপরুপ রুপ। মাঠে সবুজ ফসল দেখে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা।
আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের গম বীজ সরবারহ করায় কৃষকরা গম চাষে বেশি ঝুঁকছেন। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় জেলার ৯টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে গমের ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। পাশাপাশি গত বছরের চেয়ে এ বছরও ভাল ফলনের পাশাপাশি ভাল দামের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা। জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সরাসরি কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতাসহ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে গম ক্ষেত দেখে বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়ায় কৃষরা গমের চাষাবাদ বাড়িয়েছেন।
এ বছরও গমের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি কৃষকরা ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৫ থেকে ১৬ মন পর্যন্ত ফলন আসে বলে জানান কৃষি অফিস ও গম চাষিরা।
কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের গমচাষি আব্দুল বাতেন বলেন, ধান চাষে এখন খুব একটা দাম পাই না তাই এবার গম চাষ করেছি। এছাড়াও গমচাষে খুব একটা সেচ দিতে হয় না।সবকিছু ঠিক থাকলে এবার আশাকরি ভালো লাভ করতে পারবো।
আরেক চাষি আতাউর রহমান বলেন, গত ২ বছর আগে গমের চাষে লোকসানে পড়েছিলাম। তাই এর পরের বছর গমের চাষ বাদ দিয়েছিলাম। কৃষি অফিসের পরামর্শে আবার এই বছর গমের চাষ শুরু করি। এই বছর রোগের আক্রমণ না হওয়াতে ফসল বেশ ভাল হয়েছে। আশা করছি এই বছর গম চাষের লাভ বেশি পাব।
কুড়িগ্রাম কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন,এবার আবহাওয়া গম চাষের উপযোগী হওয়ায় গম চাষে ভালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বৈশ্বিক সংকট বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গমের চাহিদা ও দাম দিন-দিন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন তিনি।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তিস্তার চরের মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে বিদেশে, আনন্দে ভাসছেন চাষিরা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।