জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকার ধামরাইয়ের বাটুলিয়া এলাকায় একটি মাজার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সেইসঙ্গে মাজারের খানকা ঘর ও পাগল ধাম ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘আধ্যাত্মিক সাধক’ বুচাই পাগলার মাজার নামে পরিচিত।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া এলাকায় কালামপুর-সাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে মাজারটিতে হামলা চালানো হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভাঙচুর করা হয়।
মাজার ভবনটি খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। ৪টার দিকে সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাজারের ভবনটির তিনটি দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবনের চারপাশে সীমানা দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছাদে মোট পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে, এর মধ্যে চারটির মধ্যে তিনটি গম্বুজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মাজারের পাশে থাকা একটি টিনের কক্ষ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, বাটুলিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ‘বুচাই পাগলা’। তার মধ্যে আধ্যাত্মিক গুণ ছিল বলে বিশ্বাস করতেন স্থানীয় অনেকে। এ কারণে ধীরে ধীরে তার ভক্ত অনুসারী তৈরি হয়। আশির দশকে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এরপর বাটুলিয়ার সড়কের পাশে তাকে দাফন করা হয়। ওই কবরকে ঘিরেই মাজার গড়ে ওঠে। প্রতিবছর সেখানে ওরশ ও মাসব্যাপী মেলা আয়োজন করা হয়। বাউল গানসহ নানা আয়োজন থাকে। এর পাশাপাশি এখানে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনেরও অভিযোগ রয়েছে। এর জেরে বুধবার সেখানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি বলেন, এখানে অনেক আগে থেকেই অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছে। তবে জনগণ প্রতিবাদ করতে পারেনি। এখন কালামপুর ও আশপাশের লোকজন একত্রিত হয়ে এটি ভেঙে ফেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এলাকার একটা লোকও মাজার ভাঙার সঙ্গে ছিল না। তারা কেউ বুঝতেই পারেনি। এই মাজারে শরিয়া বিরোধী কোনো কাজকর্ম করতে দেইনি আমরা। মাদক সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। পুলিশ প্রশাসন সার্বক্ষণিক মাজারে নিরাপত্তা দিয়েছে। দূরের লোকজন এসে যেভাবে মাজার ভাঙল এটা অন্যায়। আল্লাহ এর বিচার করবেন।
সানোড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. তিতুমীর হোসেন বলেন, একদল লোক এসে অতর্কিতভাবে এ ভাঙচুর করেছে। ইউএনওর ফোন পেয়ে দুজন চৌকিদার নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে তাদের সামনে যেতে পারিনি। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত বৈদ্য বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থলে যান। তারা কিছু দাবিদাওয়া জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে ইউএনও মহোদয় বৈঠক করবেন। আপাতত তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।