বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সম্প্রতি নগদে (Nagad) ঘটে যাওয়া এক চাঞ্চল্যকর আর্থিক জালিয়াতির ঘটনায় দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও, যারা প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে ৬৫০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ই মানি তৈরি করেছিলেন, তারা যেন আবার নতুন করে সাংবাদিকদের সামনে ফিরে এসেছেন। এ কারণে মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে যে, কি পরিমাণ ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা? এমন এক পরিস্থিতি যখন জনগণের বিশ্বাস ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে, সরকার এবং বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে।
Table of Contents
নগদে আর্থিক জালিয়াতির বর্তমান পরিস্থিতি
নগদে প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজ শনিবার সাংবাদিকদের জানান, যারা গত বছরের ৫ আগস্টের পর পালিয়ে গিয়েছিলেন, তারা এখনও তৎপর হয়ে উঠেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস-provider হিসেবে পরিচিত নগদ, মূলত ডাক বিভাগের অধীনে পরিচালিত হলেও বর্তমানে আর্থিক সেবা সংক্রান্ত আলোর প্রচেষ্টাকে পিছনে ফেলছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ সমীক্ষা চালাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য নতুন আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
গ্রাহকদের অর্থ নিরাপত্তার গুরুত্ব দিন দিন বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন নগদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষেরা বলছেন, এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং আর্থিক সক্ষমতা থাকলেও, তা যথেষ্ট নয়। একদিকে যেখানে দেশব্যাপী ভালোবাসা ও বিশ্বাসের দোহাই দিচ্ছে, সেখানে আবার নগদির রাজনৈতিক চাপ ও আইনগত কৃত্রিম সংকল্প যেন তাদের কার্যক্রমকে সঙ্কটে ফেলছে।
নগদে আর্থিক জালিয়াতির আগের ঘটনা
নগদের এই নতুন ঘটনা নতুন নয়। ৬৫০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ই মানি তৈরির পিছনে আছে আগের আরও কিছু গুরুতর কাণ্ড। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, অতীতে নগদ থেকে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মেলেনি আর ২ হাজার কোটি টাকার সরকারি ভাতা ‘লুট’ হয়েছে। এই সব ঘটনা নগদের সুনামকে ক্ষুণ্ণ করছে।
গ্রাহকের নিরাপত্তা রক্ষায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের বিষয়ে একটি সমস্ত তদন্ত করার কাজে মনোনিবেশ করেছে। আমরা আশা করি, এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।
স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন
নগদের এই সংকট মোকাবিলার জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষ চালু করা উচিত। কাজের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এলেও, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদি গ্রাহকদের স্বার্থ হুমকির মধ্যে পড়ে যায়, তবে সত্যিকার অর্থে কোনো প্রতিষ্ঠানকে পরিচালিত করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জনগণের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যার মধ্যে সাধারণ মানুষের সদর্থক অন্তর্ভুক্তি এবং পরিবেশিত তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা দরকার। এর কোনো বিকল্প নেই।
সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
আগামী ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। মামলার নিষ্পত্তি হওয়া গেলে নগদে আর্থিক জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এটি সাধারণ মানুষের জন্য আশার আলো বয়ে আনবে।
এদিকে ডাক বিভাগকে এই বিষয়ে অবহিত করা হলেও তারা তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটি পরিষ্কার, একটি অসম্পূর্ণ এবং অর্থের কাছে দায়বদ্ধ নয় এমন একটি কোম্পানি কখনোই মানুষের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না।
নগদের বিরুদ্ধে চলমান মামলা, তদন্ত এবং সরকারি সেবা ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়াদি সাধারণ মানুষের অর্থের নিরাপত্তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
FAQ:
1. নগদে কি আক্রমণ করা হয়েছে?
হ্যাঁ, নগদে ৬৫০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ই মানি তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে।
2. জাতীয় ব্যাংক কি পদক্ষেপ নেবে?
বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করেছে এবং দ্রুত নিষ্পত্তির আশ্বাস দিয়েছে।
3. নগদ সেবার মূল্যায়ন কিভাবে হবে?
স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষের দ্বারা নগদের কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে।
4. গ্রাহকদের কি ক্ষতি হয়েছে?
গ্রাহকদের অর্থের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছে, যা স্থায়ীত্ব দুর্বল করে দেয়।
5. তদন্ত কবে হবে?
নতুন তথ্য অনুযায়ী, আগামী ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত অনুষ্ঠিত হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।