বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই নিয়ে এসেছে যুক্তি দক্ষতাসম্পন্ন নতুন এআই মডেল। গত বৃহস্পতিবার একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে ওপেনএআই o১ এবং o১-মিনি নামের দুটি এআই মডেল নিয়ে আসার কথা জানিয়েছে।
এই মডেলগুলোকে এমনভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে যাতে করে কোনো জটিল সমস্যাকে ধাপে ধাপে সমাধানের মাধ্যমে নির্ভুলতা নিশ্চিত করা যায়। উল্লেখ্য, o১ মডেলটি বৃহস্পতিবার থেকেই চ্যাটজিপিটি এবং এর এপিআই-তে ব্যবহার করা যাচ্ছে।
ওপেনএআই-এর অভ্যন্তরে ‘স্ট্রবেরি’ নামে পরিচিত একটি প্রজেক্ট থেকে এই দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। যুক্তি দক্ষতাকে ব্যবহার করে জটিল কার্যসম্পাদনে এবং আগের মডেলগুলোর তুলনায় গণিত, বিজ্ঞান ও কোডিং সম্পর্কিত বিষয়ে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং সমস্যার সমাধানে সিদ্ধহস্ত নতুন এই এআই মডেল দুটি।
এআই মডেলের যুক্তি দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করা ওপেনএআই-এর গবেষক নোয়াম ব্রাউন সম্প্রতি নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে নিশ্চিত করেছেন যে এই দুটি এআই মডেল ‘স্ট্রবেরি’ প্রজেক্টেরই ফসল। ব্রাউন লিখেছেন, “সাধারণ যুক্তি দক্ষতা সম্পন্ন এআই মডেল তৈরিতে ওপেনএআই-তে আমাদের প্রচেষ্টার ফসল আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
ব্লগ পোস্টে ওপেনএআই দাবী করেছে, o১ মডেলটি আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের যোগ্যতার পরীক্ষায় ৮৩ শতাংশ স্কোর করেছে। এর আগের মডেল জিপিটি-৪o এর স্কোর ছিল ছিল যেখানে মাত্র ১৩ শতাংশ।
প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রামিং-এর প্রশ্ন সমাধানেও এআই মডেল দুটিতে উন্নতির ছাপ স্পষ্টতই লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক সমস্যা সমাধানে নির্ভুলতার প্রশ্নে এআই মডেল দুটি মানুষের পিএইচডি-স্তরের নির্ভুলতাও ছাপিয়ে গেছে।
ব্রাউন আরও জানিয়েছেন যে, এই স্কোর অর্জনে মডেলগুলো ‘চেইন অব থট’ যুক্তি দক্ষতা ব্যবহার করেছে। ‘চেইন অব থট’ যুক্তি দক্ষতায় বিভিন্ন জটিল কাজকে ছোট ছোট যৌক্তিক ধাপে ভাগ করে সম্পাদন করা হয়। এক্ষেত্রে গবেষকরা প্রতিটি জটিল কাজের ছোট ছোট ধাপগুলোকে প্রাথমিকভাবে প্রম্পট আকারে নির্দেশ দিয়েছেন।
এভাবে প্রম্পট আকারে নির্দেশ দেয়ার মাধ্যমে এআই মডেলগুলোকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে এখন আর ছোট ছোট প্রম্পট দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এআই মডেলগুলো এখন নিজেরাই জটিল কাজগুলোকে ধাপে ধাপে করার মাধ্যমে পুরো কাজটি নির্ভুলভাবে সম্পাদন করতে পারে।
ব্লগ পোস্টে ওপেনএআই আরও বলেছে, “আমরা এই মডেলগুলোকে এমনভাবেই প্রশিক্ষণ দিয়েছি যাতে করে সমস্যা সমাধানের আগে তারা আরও বেশি সময় দিয়ে সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবে, যেমনটা একজন ব্যক্তি করে থাকে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা শিখেছে কিভাবে চিন্তার প্রক্রিয়ায় উন্নতি সাধন করতে হয়, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয় এবং নিজেদের ভুল চিহ্নিত করতে হয়।”
ওপেনএআই-এর তৈরি চ্যাটজিপিটি বর্তমানে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এআই চ্যাটবট। নতুন এই মডেল দুটির আবির্ভাবে প্রযুক্তি বিশ্বে তাঁদের অবস্থান যে আরও শক্তিশালী হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে জটিল কাজ করার ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি প্রতিদ্বন্দ্বী এআই চ্যাটবটগুলোর থেকে আরও খানিকটা এগিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ওপেনএআই-তে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ মাইক্রোসফটের। এখন প্রশ্ন হলো ওপেনএআই-এর নতুন দুটি এআই মডেল কি তাহলে অচিরেই মাইক্রোসফটের চ্যাটবট কো-পাইলট-এও দেখা যাবে। এর উত্তর জানার জন্য কিছুটা অপেক্ষাতো করতেই হবে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।