নতুন করে যত সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে সরকারি কর্মচারীদের
জুমবাংলা ডেস্ক: সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা এই মুহূর্তে সরকারের নেই। তবে তাদের কিছু আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সব কিছু ঠিক থাকলে কয়েকটি গ্রেড বিবেচনায় নিয়ে সেই গ্রেডে কর্মরত-কর্মচারীদের টিফিন ভাতা ও সন্তানদের শিক্ষা ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটেই এর একটা প্রতিফলন থাকবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক শফিকুল ইসলাম-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
জানা গেছে, সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল, বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদকে জানিয়েছিলেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই। তবে করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে এবছর সরকারি চাকুরেদের নতুন বেতন স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা দিতে পারছে না সরকার। তাদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কথা বিবেচনায় নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, গত ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে নরসিংদী ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব আমলে নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের চিকিৎসা ভাতা, ১১ থেকে ২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের টিফিন ভাতা এবং সন্তানদের জন্য প্রদেয় শিক্ষা সহায়ক ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উঠে আসা এসব প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অর্থ বিভাগকে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অর্থ বিভাগ এ লক্ষ্যে কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেছিলেন, ১১ গ্রেড থেকে ২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের টিফিন ভাতা মাসে ২০০ টাকার পরিবর্তে সময়োপযোগী হারে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সূত্র জানায়, সম্মেলনের প্রথম দিবসের দ্বিতীয় কার্য অধিবেশনে নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান সরকারি চাকরিজীবীর সন্তানের জন্য প্রদেয় শিক্ষাসহায়ক ভাতা যুগোপযোগী করা, সরকারি চাকরিজীবীর চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধি করা এবং সরকারি দাবি আদায় আইন-১৯১৩ যুগোপযোগীকরণ ও ম্যানুয়াল প্রস্তুত করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। এই অধিবেশনের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে গত ১০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেলিন, সরকার ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল আদেশ জারি করে, যা এখনও বলবৎ রয়েছে। অতীতে বেতন স্কেল আদেশে সরকারি কর্মচারীদের প্রতি বছর নির্ধারিত অঙ্কের বেতন বৃদ্ধির সুবিধা ছিল। কিন্তু জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এ মূল বেতনের শতকরা হারে বেতন বৃদ্ধির বিধানের কারণে সরকারি কর্মচারীদের একটি নির্ধারিত হারে নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ঘটে। যা সর্বস্তরের সরকারি কর্মচারীর জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছে। তিনি আরও বলেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা এ মুহূর্তে সরকারের নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সব সময়ই দেশের সর্বস্তরের মানুষের কথা ভাবেন। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরাও এর বাইরে নন। তাই তিনি অবশ্যই একটি ভালো সংবাদ দেবেন, এমন প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। যেটি ভালো হয় সেটির ঘোষণা আমরা সময় মতোই পাবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।