আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শনিবার (১০ আগস্ট) পবিত্র কাবায় নতুন গিলাফ পরানো হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এবার ফজরের নামাজের আগে কাবার গিলাফ পরানো হলো। এর আগে আরাফাতের দিন সকালে কাবা শরিফে নতুন গিলাফ পরানো হতো। এবার এর ব্যতিক্রম হলো।
হজ মৌসুম এলে কাবার গিলাফকে নীচ থেকে ভাঁজ করে অনেকটা ওপরে তোলে গুটিয়ে রাখা হয় এবং ভাঁজকৃত গিলাফকে সাদা কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। ফলে সারা বছর কালো গিলাফে আচ্ছাদিত গিলাফ দেখা গেলেও হজের সময় দেখা যায়, কাবা ঘরের খালি কিছু অংশ এবং কিছু অংশ সাদা কাপড়ে ঢাকা। আজ থেকে সেটাও আর দেখা যাবে না। বদলে ফেলা হলো কাবার গিলাফ।
হজের দিন হাজিরা সব আরাফাতের ময়দানে থাকেন এবং মসজিদে হারামে মুসল্লিদের ভিড়ও থাকে কম। হজপালনকারীরা মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত থেকে ফিরে এসে কাবা শরিফের গায়ে নতুন গিলাফ দেখতে পাবেন।
কাবা শরিফের দরজা ও বাইরের গিলাফ দু’টোই মজবুত রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। গিলাফের মোট পাঁচটি টুকরা বানানো হয়। চারটি টুকরা চারদিকে এবং পঞ্চম টুকরাটি দরজায় লাগানো হয়। টুকরাগুলো পরস্পর সেলাইযুক্ত। এর পর্দার উচ্চতা ১৪ মিটার।
কাবার গিলাফের প্রতিটি কাপড়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬৭০ কেজি রেশম, ১৫০ কেজি সোনা ও রুপার চিকন তার। ৪৭ থান সিল্কের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় এই গিলাফ। গিলাফের মোট আয়তন ৬৫৮ বর্গমিটার। প্রতিটি থান ১ মিটার লম্বা, ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া। একটা আরেকটার সঙ্গে সেলাই করা।
প্রতিবছর দু’টি করে (একটি সতর্কতামূলক) গিলাফ তৈরি হয়। একটি হাতে তৈরি। এটা বানাতে সময় লাগে আট-নয় মাস। অন্যটি মেশিনে মাত্র এক মাসে তৈরি করা হয়।
উম্মুল জুদ কারখানায় মদিনায় হুজরায়ে নববির গিলাফও তৈরি করা হয়। কাবার গিলাফ বানানো হয় বিশেষ একটি কারখানায়। কারখানাটি মক্কা মোকাররমার চার কিলোমিটার দূরে উম্মুল জুদ এলাকায় অবস্থিত।
১৩৪৬ হিজরি সনে বাদশাহ আবদুল আজিজ আল সৌদের শাসনামলে এ কারখানাটি স্থাপন করা হয়।
কাবার গিলাফ পাল্টানোর কাজকে পবিত্র ও সম্মানের কাজ হিসেবে ইসলামের পূর্ব যুগ থেকে বিবেচনা করা হয়। বছরে একবার এ পবিত্র ঘরের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।
মালিক তুব্বা নামক এক বাদশাহ সর্বপ্রথম কাবাঘরে গিলাফ পরান।
সৌদি আরবে কাবার বিশেষ গিলাফ তৈরির কারখানা স্থাপন করার আগে আগে মিসর, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে গিলাফ তৈরি করিয়ে আনা হতো।
কাবার গিলাফে রেশমি সুতায় স্বর্ণের প্রলেপযুক্ত তার দিয়ে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পবিত্র কোরআনের আয়াত উৎকীর্ণ করা হয়। অতি উন্নতমানের কালো কাপড়ের ওপর কোরআনের আয়াত শিল্পীরা নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।