জুমবাংলা ডেস্ক: গত জানুয়ারি মাসে জিএম কাদেরকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ছোট ভাইকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হলেও ক্ষমতা ঠিকই এরশাদের হাতেই ছিল। ফলে তিনি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।
জাপাকে শক্তিশালী করা ও সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য কমিটি অনুমোদন এবং বহিস্কারের ক্ষমতা দাবী করে আসছিলেন কাদের। কিন্তু হঠাৎ করেই জিএম কাদেরকে দল পরিচালনায় ব্যর্থ উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেন এরশাদ। সরিয়ে দেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতার পদ থেকেও ।
জিএম কাদেরকে সরিয়ে দিলে আন্দোলনে নামে রংপুরের ৮ জেলার নেতারা। তারা গণপদত্যাগ ও জাপাকে প্রতিহত করার আল্টিমেটাম দেয়পার কারণে জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করেন এরশাদ।
এবার ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রদান করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ। শনিবার রাত ১১টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।
অসুস্থতার কারণে চেয়ারম্যান হিসেবে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে না পারায় এরশাদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ হুইলচেয়ারে বসে বেশ আড়ষ্ট কণ্ঠে কথা বলছিলেন। শুরুর দিকে তাঁর বক্তব্য শোনা যাচ্ছিল না সামান্য দূর থেকেও। এ সময় সাংবাদিকরা অনুরোধ করেন আরেকটু জোরে কথা বলতে। অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে একটু শব্দ করে তিনি লিখিত বক্তব্য পড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অসুস্থ এরশাদ তা শেষ করতে পারেননি। তখন পাশেই বসা জি এম কাদের বক্তব্যের বাকি অংশ পড়ে শোনান।
লিখিত বক্তব্যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আমার ছোট ভাই গোলাম কাদের এমপি, কো-চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে, সহায়তা করতে সবার প্রতি অনুরোধ করছি ও নির্দেশ প্রদান করছি।’
কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘বর্তমানে অসুস্থতার কারণে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে, সে জন্য দায়িত্বসমূহ পালনের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জি এম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করলাম। গঠনতন্ত্রের ২০-এর ক ধারা মোতাবেক এ নির্দেশ প্রদান করা হলো, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এরশাদ কয়েক মাস ধরে অসুস্থ। এর মধ্যে তিনি দুই দফা সিঙ্গাপুর গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে দেশে ফিরেও দলীয় বা সামাজিক কোনো কর্মসূচিতে তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসছেন।
চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাওয়ার আগে গত ১ জানুয়ারি প্রথম জাতীয় পার্টিতে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে ছোট ভাই কাদেরের নাম ঘোষণা করেছিলেন এরশাদ। এরপর এরশাদের অনুপস্থিতিতে জি এম কাদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর দলের ‘রওশনপন্থী’ নেতারা নাখোশ হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে তৈরি হয় দলের মধ্যে অস্থিরতা।
সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পর গত ২২ মার্চ দলে ‘বিভেদ’ তৈরি ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে ‘ব্যর্থতার’ অভিযোগ তুলে জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন এরশাদ। পরের দিন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকেও কাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সংসদের উপনেতা করা হয় রওশনকে।
এরপর সপ্তাহ দুয়েক না হতেই গত ৪ এপ্রিল জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ ফিরিয়ে দেন এরশাদ। দুই দিন পর এক ‘সাংগঠনিক নির্দেশে’ তাঁকে আবার দলের ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যানও ঘোষণা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।