নবম পে-স্কেল নিয়ে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকে বেশকিছু খসড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পে-কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিশনের ড. মোহাম্মদ আলী খান, মো. ফজলুল করিম, মো. মোসলেম উদ্দীন, সদস্য সচিব মো. ফরহাদ সিদ্দিকসহ কমিশনের খন্ডকালীন সদস্য এবং কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ কমিশনের সভায় কমিশনের তৈরিকৃত ড্রাফট নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয়ে সংশোধনী এনে পরবর্তীতে আবারও পূর্ণ কমিশনের সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পূর্বে আরও অন্তত তিনটি পূর্ণ কমিশনের সভা করা হবে। এরপর কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানা গেছে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিন ধাপে পে-স্কেলের সুপারিশ বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে পে-কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। দ্বিতীয় ধাপে এটি সচিব কমিটিতে যাবে। সচিব কমিটির অনুমোদনের পর তা উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে। উপদেষ্টা পরিষদ কমিশনের রিপোর্টের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এরপর এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সভায় উপস্থিত কমিশনের এক সদস্য বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় বলেন, ‘পে-স্কেলের খসড়া ড্রাফট প্রস্তুত। তবে কিছু বিষয়ে সংশোধনী প্রয়োজন। এজন্য আমাদের আরও সভা করতে হবে। এরপর কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।’
কমিশন যে ড্রাফট তৈরি করেছে সেখানে গ্রেড সংখ্যা এবং বেতনের কেমন সুপারিশ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সদস্য বলেন, ‘কমিশন একটি ড্রাফট তৈরি করেছে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত না হলে বেতন এবং গ্রেড নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে অতিরঞ্জিত কোনো সুপারিশ করা হবে না। বাস্তব সম্মত সুপারিশ করা হবে।’
জানা গেছে, নবম পে-স্কেল নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে জাতীয় বেতন কমিশন (পে-কমিশন)। তবে এখনো সম্পূর্ণ প্রতিবেদন লেখার কাজ করা যায়নি বলে জানিয়েছে পে-কমিশন। সোমবার কমিশনের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, কর্মচারীদের সাম্প্রতিক মহাসমাবেশ কিংবা বুধবার থেকে কঠোর কর্মসূচি—কোনো কিছুতেই বিচলিত নন তারা।
এদিকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও সম্প্রতি সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের দমন প্রক্রিয়া ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন পরবর্তী সরাকারি সিদ্ধান্তে একরকম ভীত পে স্কেলের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সেজন্য আপাতত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছেন না তারা। সরকারি সিদ্ধান্ত ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্যে কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা দাবি পেশ করব, তবে সব দাবি রাস্তায় আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হয় না। এক্ষেত্রে পে স্কেলের দাবিতে আমরা আলোচনার মাধ্যমে আদায় করতে চাইছি। পাশাপাশি সচিবালয়ের ভেতরে সম্প্রতি অপ্রীতিকর ঘটনায় বাইরের কর্মচারীরা সচিবালয়ের কর্মচারীদের ওপর ক্ষুব্ধ। সব বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমরা অর্থ উপদেষ্টা সালেহ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছি। উনার সঙ্গে দেখা করতে আমরা অপেক্ষা করছি। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আমরা দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ আলচনায় বসবো। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



