টানা তিনদিন অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট তুলে নেয়ার পর রোববার রাত থেকে রাজধানীতে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। রাতেই ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দেখা গেছে। তবে নতুন ভাড়ায় যাত্রী-শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বাগবিতণ্ডা কোথাও কোথাও হাতাহাতি পর্যন্ত হতে দেখা গেছে।
সোমবার সকালে অনেক দূরপাল্লার বাস এসে পৌঁছায় রাজধানীতে। তারা নতুন নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে। কোনো কোনো পরিবহন নতুন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। কোথাও কোথাও বাস শ্রমিকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডাতেও জড়াচ্ছেন যাত্রীরা।
যাত্রীরা বলছেন, তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। এটা অযৌক্তিক। লিটারে ৫ টাকা করে বাড়ালে সাধারণ মানুষের জন্য ভালো হতো। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ চাপ তৈরি হয়েছে।
রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, মোহাম্মাদপুর, ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, বাংলামোটর ও মহাখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগর পরিবহনের বিভিন্ন কোম্পানির বাসগুলো সড়কে চলাচল করছে। যাত্রীরা বিভিন্ন স্টপেজে ভিড় করছেন।
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন রবিউল ইসলাম। মোহাম্মদপুর থেকে তিনি যাবেন পুরানা পল্টন। বাসের হেলপারের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তার বাগবিতণ্ডা শেষে তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত তিনদিন সড়কে বাস চলেনি, এতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এখন বাস চলাচল শুরু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি।
তিনি অভিযোগ করেন, নতুন করে বাসের যে ভাড়া নেয়া হচ্ছে তা অন্যায়। কিন্তু এতে আপনি কিছুই বলতে পারবেন না। এভাবেই চলতে হবে।
আসাদগেট থেকে বাসে মগবাজারে নামেন রিফাত। প্রতিদিন আসাদগেট থেকে ১৫ টাকা ভাড়া দিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু নতুন ভাড়া কার্যকর হওয়ায় তাকে বাড়তি ১০ টাকা দিতে হচ্ছে। অনেকটা অসন্তোষ প্রকাশ করে রেজাউল বলেন, ১০ টাকা বেশি নেয়াটা ঠিক হয়নি। সর্বোচ্চ পাঁচ টাকা বাড়ানো যেত।
গত ৩ নভেম্বর রাতে ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করে সরকার, যা ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়। তখন পরিবহন মালিকরা বলেন, এত দামে ডিজেল কিনে বিদ্যমান ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। পরে মালিকরা শুক্রবার সকাল থেকে বাসসহ পণ্যবাহী যান চালানো বন্ধ করে দেন। যদিও তাদের দাবি, ধর্মঘটের বিষয়ে তাদের কোনো নির্দেশনা ছিল না। আর অঘোষিত ওই ধর্মঘটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএর কাছে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে। কিন্তু বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বৈঠকের জন্য মালিক সমিতিকে রোববার ডাকে বিআরটিএ।
পরে বৈঠক শেষে মালিকপক্ষের দাবি মেনে নিয়ে বাসের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। পরে ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরপর থেকেই সড়ক মহাসড়কে চলতে শুরু করে বাস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।