নতুন শিক্ষা নীতি: শিক্ষার্থীদের জন্য কী পরিবর্তন আসছে?

নতুন শিক্ষাক্রম

শুরু হয়ে গেলো নতুন শিক্ষাবর্ষ। নতুন এই শিক্ষাবর্ষের জন্য আলোচিত বিষয় ‘নতুন শিক্ষাক্রম’। চলমান ‘শিক্ষাক্রম’ থেকে বেশ পরিবর্তন নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে এই ‘শিক্ষাক্রমে’। তবে সব শ্রেণির জন্য এই পরিবর্তন একই সঙ্গে ঘটছে এরকমও না। দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।  এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণিতে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে বই পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

নতুন শিক্ষাক্রম

এ বছর (২০২৫ সালে) যারা নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে তারা আগের মতো নবম ও দশম মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যসূচি শেষ করে ২০২৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেবে। এর মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষাক্রমের ২০১২ সালের প্রচলিত রীতি পুনঃপ্রবর্তিত হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ ও নতুন পুস্তক মুদ্রণ এবং চলমান মূল্যায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা বিষয়ক পরিপত্রে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর বিষয়ে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানাবিধ বাস্তব সমস্যা বিদ্যমান থাকায় ওই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় মর্মে প্রতীয়মান। এই পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নতুন নির্দেশনায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জণ করে মুদ্রণ করা হবে। শিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হবে। এ ক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামের আওতায় আসেনি। তাই তারা অনেকটাই নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। তারা তাদের মতো করেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।

ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির জন্য বর্তমানে ব্যবহৃত পাঠ্যবই ২০২৪ সালজুড়ে বহাল থাকবে। সংশোধিত পাঠ্যবই ২০২৫ সালে এসেছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রতিটির ছয়টি অসম্পন্ন বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম আর অনুষ্ঠিত হবে না। ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষা সংশোধিত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন মূল্যায়ন কাঠামো বিদ্যালয়গুলোতে বিতরণ করা হয়েছে।

২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৬ সালের অনুষ্ঠাতব্য পরীক্ষা) নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রাখা হবে। পাঠ্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য পাঠ্যসূচির সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রবর্তন করা হবে, যাতে তারা ২০২৬ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।