জুমবাংলা ডেস্ক : স্বামীর সাথে হাওরে নৌকা ভ্রমণ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নববধূ। এ সময় ধর্ষিতা স্বামী ও তার বন্ধুকে মারপিট করে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাদের মোবাইলে ধারণ করা হয় অশ্লীল ভিডিও। গত ২৫ আগস্ট দুপুরে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৮ জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন নির্যাতিতার স্বামী। বিকেলে আদালতের নির্দেশে লাখাই থানায় মামলাটি এফআইআরভূক্ত করা হয়।
পুলিশ ও নির্যাতিতার পরিবার জানায়, এক মাস আগে মোড়াকরি গ্রামের এ যুবকের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই গ্রামের ওই মেয়েটির। বিয়ের পরপরই স্বামী চলে যান ঢাকায়। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে আসেন। গত ২৫ আগস্ট সকালে তিনি তার স্ত্রী ও বন্ধুকে নিয়ে হাওরে নৌকা ভ্রমণে যান। ভ্রমণের এক পর্যায়ে দুপুরে একই গ্রামের মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়াসহ ৭/৮ জন যুবক নৌকাযোগে এসে তাদের গতিরোধ করে। পরে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নির্যাতিতার স্বামী ও তার বন্ধুকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এক পর্যায়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা নববধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় ঘটনার একটি ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণকারীরা। এ ঘটনা কাউকে জানালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
গৃহবধূ ও তার আহত স্বামী জানান, বাড়িতে আসার পর লোকলজ্জা ও প্রভাবশালী ধর্ষণকারীদের হুমকির ভয়ে তারা কাউকে জানাননি। একপর্যায়ে ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে বুধবার দুপুরে তারা স্বামী-স্ত্রী হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে আজ হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুরাদ আলীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সদর হাসপাতালে নির্যাতিতার সাথে কথা বলেন ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদি হাসান জানান, গতকাল দুপুরে ভিকটিম সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে বিকেলে তারা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মোড়াকড়ি গ্রামের মুছা মিয়া (২৬), মিঠু মিয়া (২১), হৃদয় মিয়া (২২), সুজাত মিয়া (২৩), জুয়েল মিয়া (২৫), সোলায়মান রনি (২২), মো. মুছা (২০) ও শুভ মিয়াকে (১৯) আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে সোলায়মান রনি ও মিঠু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব আর শুভকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি জানান, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।