দীর্ঘ এক দশক পর গঠিত নবম পে কমিশনের সুপারিশের দিকে এখন তাকিয়ে আছেন দেশের সরকারি কর্মজীবীরা। গত ৩০ অক্টোবর শেষ হয়েছে নতুন বেতন কাঠামো তৈরির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে পে কমিশনের মতবিনিময়।

পে কমিশন গঠনের পর পে-স্কেল নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রায় ৩০০ সংগঠনকে মতবিনিময়ের জন্য ডেকেছে কমিশন। এর মধ্যে একেক সংগঠক একেকরকম প্রস্তাব রেখেছে কমিশনের কাছে।
তবে বেতন বৃদ্ধি এবং গ্রেড কমানো নিয়ে প্রায় সবার দাবিই ছিল এক। যারপরনাই, এ দুটি নিশ্চিত করে হতে চলেছে।
নানা সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের প্রস্তাবে মূল বেতন দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ানোর আভাস মিলেছে। এ কারণে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে বেতন বৃদ্ধির হার নিয়ে আগ্রহের পাশাপাশি রয়েছে উদ্বেগও। কেননা স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত দেশে আটবার পে কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রত্যেকবারই বেতন ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে নিচের গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।
সুপারিশ জমা ও পে স্কেল ঘোষণা কবে?
মতবিনিময় শেষে প্রাপ্ত সব মতামত পর্যালোচনা করে সুপারিশের খসড়া তৈরি করবে কমিশন। এরপর সব সদস্যের সম্মতিতে চূড়ান্ত করে জমা দেওয়া হবে সুপারিশ। তবে ঠিক কবে এই সুপারিশ জমা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে এখনো কিছু জানা যায়নি।
এ বিষয়ে কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান সরকার কিছুদিন আগে বলেছেন, ‘অনলাইনে মতামত নেওয়া শেষ হয়েছে গত ১৫ অক্টোবর, এখন সমিতিগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় চলছে। ৩০ অক্টোবর এই মতবিনিময় শেষ হবে। তারপর আমরা বসে চূড়ান্ত সুপারিশের দিকে যাবো।’
তবে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলো ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত সুপারিশের দাবি জানিয়েছে। যাতে করে জানুয়ারিতেই নতুন পে-স্কেল কার্যকর করা যায়।
এ বিষয়ে সুখবরই দিয়েছেন মাকসুদুর রহমান। কবে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা হবে, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কমিশন গঠনের সময়ই সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেখানে সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্যে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। তাই কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নয়, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন পে স্কেল ঘোষণা করতে চাই। এই লক্ষ্যে সবাই কাজ করছি।’
একটি সূত্র জানিয়েছে, মতবিনিময় পর্ব শেষ হলেও সব প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষের দিকে সুপারিশ জমা দিতে পারে কমিশন। আর ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে পে স্কেলের ঘোষণা আসতে পারে।
কিছুদিন আগে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এরপর তিনি বলেন, নতুন বেতন কাঠামো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গেজেট আকারে বাস্তবায়ন করা হবে; পরবর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা করা হবে না।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হবে চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে। আগামী বছরের মার্চ বা এপ্রিলে নতুন পে-স্কেল যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে চলতি অর্থবছরের বাজেটেই সেজন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। বাজেট সংশোধন শুরু হবে ডিসেম্বরে, সেখানে নতুন পে-স্কেল কার্যকর করার বিধান যুক্ত করা হবে।
সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকর নতুন কাঠামো প্রণয়নে পে–কমিশনের কাজ এগিয়ে চলছে। অনলাইনে চারটি প্রশ্নমালার মাধ্যমে প্রাপ্ত মতামত ও সুপারিশ যাচাই–বাছাই চলছে। বিভিন্ন সংগঠন ও সমিতি ইতিমধ্যে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। কমিশন আশা করছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারকে পেশ করা সম্ভব হবে।।।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



