বিনোদন ডেস্ক : নাটক-ওটিটি কনটেন্টে অশ্লীলতা বাড়ছে। এর বিরুদ্ধে কঠোর হতে চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেছেন, “এফডিসিতে সন্ধ্যার পর গেলে ভয় লাগে। এসবের পেছনে দায়ী অশ্লীলতা। এখন নাটকেও অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। আমি সবসময় অশ্লীলতার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছি, প্রতিবাদ মিছিল মিটিং করেছি।”
এক জনপ্রিয় দৈনিকে সাক্ষাৎকারে নিজের চিন্তা ও পরিত্রাণ সম্পর্কে সবিস্তারে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেন রিয়াজ।
বাংলা চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন বলে মনে করছেন, আপনি বলছিলেন সন্ধ্যার পর এফডিসিতে যাওয়া যায় না…
একটা সময় সিনেমা ছিল এদেশের মানুষের অন্যতম বিনোদন মাধ্যম। কিন্তু সেই সিনেমা অশ্লীলতায় ডুবেছে।
সিনেমা হলে যাওয়ার বিশ্বাস হারিয়েছে মানুষজন। পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে যেতে পারে না। কেননা সিনেমা হলে গেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অপ্রস্তুত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যখন একটি পরিবার সিনেমা হল বিমুখ হয়ে যায় তখন সেই শিল্প টিকিয়ে রাখা যায় না।
স্বাভাবিকভাবেই অশ্লীলতা একটা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।চলচ্চিত্র অশ্লীলতায় ডুবল। বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হলো নাটক। সেই নাটকের প্রতি সম্প্রতি নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। যার ফলেই সেমিনার আয়োজন করা হয়েছিল, এবং আপনি সেখানে অংশ নিয়েছিলেন…
‘নাটক ভালো চলছিল। আমি বেশকিছু নাটকে অনেক তৃপ্তি নিয়ে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু সেই নাটকেও অশ্লীলতা ঢুকে গেল। এখন ইউটিউবের জন্য যে নাটক নির্মিত হচ্ছে তাতে ভয়াবহভাবে অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। ওটিটি প্ল্যাটফরমের সিরিজে অশ্লীলতা ঢুকে গেছে। এখন পরিবারকেন্দ্রিক বিনোদন মাধ্যমও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অশ্লীলতার কারণে ড্রয়িংরুমের বিনোদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সভা সেমিনার করে এসব বন্ধ করা যাবে না। এসব পদক্ষেপ নিয়ে বন্ধ করতে হবে।’
তবুও ইউটিউবের নাটকে প্রচুর ভিউ, এসব নাটককে কেন গ্রহণ করছে মানুষ, আপনার কী মনে হয়?
হয়তো, অশ্লীল নাটক বানানো হচ্ছে কারণ এক শ্রেণীর মানুষ অশ্লীলতা পছন্দ করেন। ভিউ, লাইকের কারণে প্রজন্ম অশ্লীলতার চর্চা করছে। কিন্তু এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। অশ্লীলতা দীর্ঘস্থায়ী হবে না, এইসব অশ্লীল নাটক সিরিজে অশ্লীলতা- এক সময় অরুচি তৈরি করবে; সামাজিক বন্ধন গুলোকে ভেঙে ফেলবে। দেশের সংস্কৃতিকে পঙ্গু করে ফেলবে।
আপনার দেখা মতে এখনকার নাটকে কী ধরনের অশ্লীল প্রসঙ্গ থাকছে?
অশ্লীলতা কোনো সংস্কৃতি হতে পারে না। কোনো দেশের সংস্কৃতি হতে পারে না। অশ্লীলতা নানাভাবেই হতে পারে। সমুদ্র সৈকতে যে পোশাক মানানসই, জুম্মার দিনে কোনো মসজিদের সামনে সে পোশাক বেমামান। শুধু পোশাক নয়, দেহভঙ্গিতেও অশ্লীলতা থাকতে পারে, শব্দ চয়নেও অশ্লীলতা থাকতে পারে। সংলাপেও অশ্লীলতা থাকতে পারে।
এর থেকে পরিত্রাণের উপায়, আপনার মতে…
গতকাল এক অভিনয়শিল্পীকে নিষিদ্ধের কথা শুনলাম। সামাজিকভাবে সেই মেয়েটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও আমি জানি না তার অপরাধ কী? অশ্লীল নাটক নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে কি এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? ডিরেক্টর গিল্ডস এটা করতে পারল, কিন্তু যারা অশ্লীল নাটক বানাচ্ছে এমন ৫ জন পরিচালককে নিষিদ্ধ করতে পারল না? এটা করতে পারলে তো অশ্লীল নাটক বানানোর প্রতি উৎসাহ কমে যেত বাকি পরিচালকদের। অশ্লীল নাটক নির্মাণকারীদের নিষিদ্ধের ব্যবস্থা নিক সংগঠন।
এছাড়াও যারা পরিচালনায় আসছে, তাদের নিয়ে নানা কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। তাদের নির্দেশনা বিষয়ক ডিরেক্টোরিয়াল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। যেহেতু ওয়েব মাধ্যমটা এখন বিশাল, সেন্সর করা সেভাবে সম্ভব না। সাংগঠনিকভাবে যতটুকু করা যায় সেভাবেই শুরু করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবেও সচেতন হতে হবে।
নাটকের অশ্লীলতা দূর হলেই অশ্লীলতা দূর হবে?
আসলে আমাদের সমন্বিতভাবে অশ্লীলতা দূর করার প্রয়াস চালাতে হবে। নাটকের অশ্লীলতা দূর করলেই যে অশ্লীলতা দূর হবে এ কথা বলা যায় না। তবে নাটকে অশ্লীলতা বন্ধ করা জরুরি। অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যমেও অশ্লীলতা ছড়ায়। একটা সময় ফেসবুক অশ্লীল কন্টেন্ট ধরতো। রিলস চালু হওয়ার পর ফেসবুকও অশ্লীলতার ভাণ্ডার হয়ে গেছে। এসবও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নাহলে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।