নিজস্ব প্রতিবেদক: চাকার নিচে আটকা নারীকে টেনে শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত নিয়ে যায় প্রাইভেটকার। এমন দৃশ্য দেখে পথচারীরা চালককে আটকে গণপিটুনি দেন।
আজ (২ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই নারী ও চালককে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছু সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান ওই নারী। তবে চালকের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে।
প্রাইভেটকার চালিয়ে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন চালক। ব্যক্তিগত গাড়িটির চালকের নাম আজহার জাফর শাহ। তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক বলে পরিচয় দিয়েছেন।
চারুকলা অনুষদের উল্টো পাশের টিএসসি অভিমুখী সড়কে এক নারী তার গাড়ির নিচে পড়ে আটকে যান। গাড়ি না থামিয়ে উল্টো চাকায় পিষ্ট অবস্থায় রেখেই রাজু ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেতের দিকে চলে যান চালক।
পথচারীরা গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ পার হলে পথচারীরা চালককে আটকে গণপিটুনি দেন।
নিহত নারীর নাম রুবিনা আক্তার। তিনি হাজারীবাগের সিকশন এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাহবাগ থেকে ঢাকা মেট্রো-ক ০৫-০০৫৫ নম্বরের গাড়িটি চালিয়ে ওই ব্যক্তি টিএসসির দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে তিনি একাই ছিলেন। গাড়িটি চারুকলার উল্টো দিকে এক মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। মোটরসাইকেলে থাকা ওই নারী ছিটকে পড়ে তার গাড়ির নিচে পড়ে আটকে যান। আশেপাশে লোকজনের উপস্থিতি দেখে চালক ভয়ে ওই নারীকে চাকার নিচে পিষ্ট অবস্থায় রেখেই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন। এ সময় পথচারীরা ওই নারীকে উদ্ধার করতে চালককে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি গাড়ি না থামিয়ে টিএসসি হয়ে নীলক্ষেতের দিকে চলে যান।
পরে পথচারীরা ধাওয়া করে নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে পলাশী অভিমুখী সড়কের মুখে গাড়িটি আটকে ফেলেন। গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় গাড়ির চালককে গণপিটুনি দেন পথচারীরা। গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়। আহত চালককে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিএসসি থেকে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ পর্যন্ত রাস্তায় ওই নারীর থেতলানো শরীরের বিভিন্ন খণ্ডিতাংশ পড়ে রয়েছে। রাস্তায় রক্তের দাগ তখনও শুকায়নি।
নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাফর বলেন, চাকায় একজন নারী আটকে থাকা অবস্থায় গাড়িটি নীলক্ষেত থেকে পলাশীর রাস্তায় আটকায় পথচারীরা। পরে ওই চালককে গণপিটুনি দেয় জনতা। পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। চালক নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।