রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার তথ্য পেয়েছে দেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের তথ্যমতে, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত আওয়ামী লীগ এবার দেশি-বিদেশি গোষ্ঠীর সহায়তায় অক্টোবরেই অরাজকতা সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হটাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, এই চক্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো ফেব্রুয়ারির নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচন পণ্ড করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো এবং পুরনো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফিরিয়ে আনা। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এই চক্র রাজধানীকে উত্তপ্ত করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার ছক আঁকছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঝটিকা মিছিল এবং আকস্মিক বিক্ষোভের আয়োজন করা হচ্ছে। এমনকি আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী আত্মগোপনে থেকে এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত বলে গোয়েন্দা তথ্য বলছে।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, অক্টোবর ঘিরে সরকারের ‘মাস্টারপ্ল্যান’ সম্পর্কে ধারণা পেয়েই প্রতিপক্ষ চক্র অস্থিরতা তৈরির পথে হাঁটছে। লক্ষ্য, যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে হটানো ও অগণতান্ত্রিক শক্তিকে সামনে আনা। মূলত দেশে ব্যর্থতা তৈরি করে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আওয়ামী লীগকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
এদিকে এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে যেকোনো ধরণের অরাজক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনে কে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, সেটা এখনই বলা কঠিন। এখানে অনেক গোষ্ঠী রয়েছে। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি একটি পক্ষ, যারা বিরোধিতার অবস্থানেই আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অতীতেও অনেকবার তথ্য পেয়েছি। ১৫ আগস্ট, ১৬ ডিসেম্বর, এমনকি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো দিনগুলোতে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছে। এবারও সেই পথে হাঁটার চেষ্টা করছে একটি চক্র। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতিই নিচ্ছে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনীতিতে যদি সত্যিকারের ঐক্য গড়ে না ওঠে, তাহলে এই ষড়যন্ত্র আরও ঘনীভূত হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পক্ষে থাকা কয়েকটি দল ইতোমধ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে মাঠে নেমেছে। এটা মোটেও শুভ লক্ষণ নয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পুলিশের ভেতরে এখনও আওয়ামীপ্রীতি কিছু ক্ষেত্রে রয়ে গেছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।