ধূমকেতু মানেই আমরা আলোকিত বিশাল লেজের কোনো দ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুর কথা চিন্তা করি। তবে এবার লেজ ছাড়া আলোহীন বা অন্ধকার সাতটি ধূমকেতু শনাক্তের দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
তাঁদের দাবি, সৌরজগতের বাইরে থাকা নতুন শনাক্তকৃত বস্তুগুলো গ্রহাণুর মতো দেখা গেলেও ধূমকেতুর মতো আচরণ করে। সাধারণত ধূমকেতু প্রধান-বেল্টের মধ্যে থাকে, যা সক্রিয় গ্রহাণু নামে পরিচিত। এসব ধূমকেতুর মধ্যে গ্রহাণুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। তবে ডার্ক বা অন্ধকার ধূমকেতুতে দেখা যায় বিপরীত চিত্র। প্রধান-বেল্টে থাকা ধূমকেতুগুলোর অবস্থান মঙ্গল গ্রহ ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে। এগুলোতে ধূমকেতুর মতোই লেজ রয়েছে।
অন্যদিকে, অন্ধকার ধূমকেতুর কোনো লেজ নেই, কিন্তু ধূমকেতুর মতো চলাচল করে। মাধ্যাকর্ষণ ছাড়াও অন্য শক্তি এদের গতির ওপর প্রভাব ফেলায় মাঝেমধ্যেই গতিপথ পরিবর্তন করতে দেখা যায়। নতুন ধূমকেতুগুলোসহ এ পর্যন্ত ১৪টি অন্ধকার ধূমকেতু শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডেভিড ফার্নোচিয়া বলেন, ‘আমরা নতুন ধূমকেতুগুলোতে লেজের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাইনি। এমন রহস্যময় গতিশীল বস্তু আমরা আগেও দেখেছি। ২০১৭ সালে আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু ওমুয়ামুয়ার মধ্যে এমন গতি শনাক্ত করা হয়েছিল। ওমুয়ামুয়ার চলার পথে কোনো লেজ বা নির্গত গ্যাসও শনাক্ত করা যায়নি। এমন আরেকটি বস্তু শনাক্ত হয়, যার নাম ২০০৩ আরএম। ২০২৩ সালের মধ্যে আরও ছয়টি অনুরূপ বস্তু আবিষ্কৃত হয়।
তখন অন্ধকার ধূমকেতু শব্দটি প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়। এসব মহাকর্ষীয় বস্তু ধূমকেতুর মতো কাজ করে, কিন্তু ধূমকেতুর মতো আলোকিত হয় না। শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে বিন্দু আকারে দেখা যায় ধূমকেতুগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড্যারিল সেলিগম্যান জানিয়েছেন, দুই ধরনের অন্ধকার ধূমকেতুর খোঁজ পাওয়া গেছে। সৌরজগতের বাইরের অন্ধকার ধূমকেতুগুলো বড়, যার ব্যাস শত শত মিটার জুড়ে বিস্তৃত। আর সৌরজগতের ভেতরে থাকা অন্ধকার ধূমকেতুগুলো ১০ মিটার বা তার চেয়ে কম আকারের। পৃথিবীতে প্রাণের শুরু কীভাবে হয়েছে, তার রহস্য এমন অন্ধকার ধূমকেতু থেকে জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে। নতুন সাতটি অন্ধকার ধূমকেতুর তথ্য প্রসেডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।