জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের সিগারেটে পাওয়া গিয়েছে নিকোটিনের চেয়েও ভয়ংকর কিছু বিষাক্ত পদার্থ। এ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকা দেশ রূপান্তর। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিগারেটে ক্ষতিকর উপাদান বলতে এতদিন শুধু নিকোটিনের নামই শুনে আসছে সবাই। নিকোটিনের উপস্থিতির কারণেই ধূমপানকে ‘বিষপানের’ সঙ্গে তুলনা করেন তারা। এবার বাংলাদেশে উৎপাদিত সিগারেটে নিকোটিনের চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষ। দেশের ‘জনপ্রিয়’ পাঁচটি ব্র্যান্ডের সিগারেট বাজার থেকে সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে এ তথ্য পেয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। সিগারেটে থাকা এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক ধূমপায়ী ও পরোক্ষ ধূমপায়ীদের শরীরে কোন ধরনের প্রভাব ফেলছে তা জানতে স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষ। ল্যাব টেস্টের কপিসহ ওই চিঠির কপি দেশ রূপান্তরের কাছে রয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) উৎপাদিত ডার্বি, হলিউড, স্টার, গোল্ডলিফ ও বেনসন এবং জাপান টোব্যাকোর নেভি ব্র্যান্ডের সিগারেট সংগ্রহ করে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের অ্যানালাইটিক্যাল কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয়ে কথা বলতে বিএটিবির কোম্পানি সচিব আজিজুর রহমানের মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। গত ১৫ জানুয়ারি ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট তৈরি করেন ওই ল্যাবের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কোয়ালিটি ম্যানেজার ড. শামশাদ বেগম কোরেশি। মূলত দেশে উৎপাদিত তামাক পাতায় এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকায় তা দিয়ে উৎপাদিত সিগারেটেও এসব ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে।
ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মাহাবুব কবির স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও খাদ্য সচিবকে চিঠি লিখেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে উৎপাদিত সিগারেটের তামাক পরীক্ষা করে প্রতি কেজিতে দশমিক ৪৯ থেকে ১০০ দশমিক ৯৫ লেড বা সিসা, দশমিক ৪০৫ থেকে ১ দশমিক ৩৭ গ্রাম ক্যাডমিয়াম ও দশমিক ৮২ থেকে ১ দশমিক ৪৯ গ্রাম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। সিগারেটের তামাকে উপস্থিত এসব ভারী ধাতু ধূমপায়ী ও পরোক্ষ ধূমপায়ীদের জন্য কী মাত্রায় ক্ষতিকর তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারণ করা অতি আবশ্যক।
‘দেশে উৎপাদিত সিগারেটের তামাকে উচ্চমাত্রার মারাত্মক ক্ষতিকর হেভি মেটাল থাকা বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অনুরোধ জানিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষ। এর আগে বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন কোম্পানির জর্দা, খয়ের ও গুল সংগ্রহ করে ল্যাব টেস্ট করে নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষ। তাতে সিসা, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়ামের ক্ষতিকর মাত্রায় উপস্থিতি পাওয়ার পর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড রতন জর্দার উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। হাকিমপুরী জর্দা উৎপাদন ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আদালত। সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত বাংলাদেশে উৎপাদিত তামাক পাতায় আশঙ্কাজনক মাত্রায় ভারী ধাতু পাওয়া গেছে। এসব তামাক পাতায় উৎপাদিত জর্দা, গুল, বিড়ি-সিগারেটেও এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকছে। এতে মানুষ ক্যানসার, কিডনি রোগ ও হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সূত্র : দেশ রূপান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।