নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের ঢাকা-ভৈরব রেললাইনের উত্তর পাশের একটি ডোবা থেকে রেক্সি বাবু রোজারিও (৪৩) নামে এক ব্যক্তির বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে তিন মাস পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ লিংকন জন রোজারিওকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) জাহাঙ্গীর কবির।
এর আগে, একই দিন ভোরে লিংকনকে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মালিকানাধীন মাছের ঘেরে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মাছের ঘেরটিতে নাম-পরিচয় বদলে চাকরি নিয়েছিলেন।
হত্যার শিকার রেক্সি বাবু রোজারিও কালীগঞ্জ উপজেলার তুমিলিয়া ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের মুকুল রোজারিওর ছেলে। গ্রেপ্তার লিংকন জন রোজারিও একই গ্রামের মৃত লিও রোজারিওর ছেলে।
নিহতের বাবা মুকুল রোজারিও বলেন, ‘গত ১০ জুলাই দুপুরে আমার ছেলে রেক্সি বাবু রোজারিওর মুঠোফোনে ০১৭৪৫-৬৯৯৮৫৪ নম্বর থেকে একটি কল আসে। পরে সে তার মাকে দড়িপাড়া বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত হয়ে গেলেও ছেলে বাড়ি ফিরে না আসায় সম্ভাব্য সকল স্থানে তার খোঁজ নেওয়া হয়। পরে রাতেই কালীগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলের মোবাইল থেকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা জানায়, ছেলেকে জীবিত পেতে হলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে গাজীপুর শাল বনে আসেন। এরপর থেকে ছেলের মুঠোফোন বন্ধ পাই।’
পুলিশ সূত্র জানায়, রেক্সি বাবু রোজারিও কিছুটা মেয়েলী স্বভাবের ছিলেন। এ নিয়ে আসামি লিংকন জন রোজারিও একদিন রেক্সি বাবু রোজারিওকে কটাক্ষ করে হিজড়া বলেন। রেক্সি বাবু রোজারিও লিংকন জন রোজারিও’র স্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রেক্সি বাবু রোজারিওকে হত্যা করেন লিংকন জন রোজারিং। তিনি মরদেহটি বস্তাবন্দি করে ডোবায় ফেলে আসেন এবং অপহরণের নাটক সাজান। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বাদীর মুকুল রোজারিওর সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে আসামি লিংকন জন রোজারিওর অবস্থান নিশ্চিত হই। পরে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মালিকানাধীন মাছের ঘেরে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ভিকটিমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা এবং মরদেহ বালির বস্তায় ভরে ডোবায় ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তিতে আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের রেললাইনের উত্তর পাশের একটি ডোবা থেকে রেক্সি বাবু রোজারিওর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজিউল্লাহ, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান, শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।