জুমবাংলা ডেস্ক : প্রথমে বাসার মালিক আমেরিকা প্রবাসী ও তার স্ত্রীর যৌন মিলনের এবং গোসলের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি। পরে সেই ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ও বিয়ে করে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ফুসকা হাউজের কর্মচারী নিজাম উদ্দিন। কিন্তু এই লোভ তাকে পৌঁছে দিয়েছে মৃত্যুর দুয়ারে। তার অব্যাহত ব্ল্যাকমেইলে অতিষ্ট হয়ে প্রবাসী ও তার লোকজন ভিডিও ফুটেজ ও ছবি উদ্ধার করতে গিয়ে হামলা করলে খুন হন ফুসকা হাউজের কর্মচারী নিজাম।
আজ শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ।
তিনি জানান, এ ঘটনায় ১৭ মার্চ দেশত্যাগের সময় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঘাতক স্বামী স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শুক্রবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তারের আদালতে হানিফ তালুকদার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে এবং হত্যার দায় স্বীকার করে।
হানিফ তালুকদার হবিগঞ্জ শহরের নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা মৃত কুদরত উল্লাহর ছেলে ও তার স্ত্রী রোমানা আক্তার (৩০)। নিহত নিজাম উদ্দিন মাধবপুর উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের ইমাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ রোডের ঢাকা ফুসকা হাউজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। নিজাম উদ্দিন ও তার দুই সহকর্মী হানিফ উল্লাহর একটি টিনশেডের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
পুলিশ সুপার জানান, ঘাতক হানিফ তালুকদার জানায়, প্রায় ৪ বছর আগে স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ আমেরিকা চলে যান হানিফ উল্ল্যাহ। ২০২০ সালের নভেম্বরে হানিফ উল্ল্যাহ তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দেশে আসেন। দীর্ঘদিন তাদের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার সুবাদে নিজাম উদ্দিনের সাথে তাদের সু-সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে নিজাম উদ্দিন আমেরিকা প্রবাসী হানিফ উল্লাহর শোবার ঘরে ও বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে রেখে প্রবাসীর স্ত্রী রোমানার গোসলের ভিডিও ও স্বামীর স্ত্রীর যৌন মিলনের ভিডিও ধারণ করে রাখে।
পরে সেই ভিডিও ও ছবি রোমানাকে দেখিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এ সময় ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকাও হাতিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে নিজাম উদ্দিন প্রবাসীর স্ত্রী রোমানা আক্তারকে তার স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রোমানা। এক পর্যায়ে বিষয়টি তার স্বামীকে জানালে হানিফ উল্লাহ নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ছবি ও ভিডিও উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন।
গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় নিজাম উদ্দিনকে রোমানার মাধ্যমে ফোন করে ডেকে আনা হয় শহরের শ্যামলি এলাকার একটি গ্যারেজে। সেখানে হানিফসহ অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে তার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। এ সময় তার কাছে মোবাইলের আনলক প্যাটার্ন জানতে চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। পরে মোবাইলটি ভেঙে ফেলা হয় এবং মারধরে নিজাম মারা যায়। পরে লাশ একটি ঝোপে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সবাই। সেদিনই ঘাতক স্বামী-স্ত্রী হবিগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নিজাম উদ্দিনের বাবা ইমাম উদ্দিন ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত আসামিসহ গত ১৫ মার্চ হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।