জুমবাংলা ডেস্ক : সরকারি বরাদ্দের গাড়ি ব্যবহার না করে নিজের গাড়ি নিজেই প্রকল্পের জন্য ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করতেন মৎস্য অধিদপ্তরের ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের’ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এস এম আশিকুর রহমান। আর সেই গাড়ি ঠিকাদারের মাধ্যমে নিজের কাছে ভাড়া দিয়ে মাসে আয় করতেন অর্ধলক্ষাধিক টাকা। যা সরকারি বিধি-বিধানের পরিপন্থি।
এ বিষয়ে জানার পর তদন্ত শুরু করে মৎস্য অধিদপ্তর। তদন্তে প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রমাণ মেলে। তবে তদন্তে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও শাস্তি হিসেবে ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও শাস্তি হিসেবে তিরস্কার সূচক লঘুদণ্ড দেওয়ার যুক্তি হিসেবে মন্ত্রণালয় বলছে, প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন ও তদারকির স্বার্থে অজ্ঞতাবশত গাড়িটি সরল বিশ্বাসে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছিল এবং আশিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করেছেন। তাই তাকে তিরস্কারের মতো লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিভাগীয় মামলার অভিযোগ, উভয়পক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত জবাব, তথ্য-প্রমাণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো পর্যালোচনায় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত বিধিমালা লঙ্ঘন করে নিজের গাড়ি প্রকল্পের গাড়ি সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভাড়া নেওয়ায় সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আশিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্য সমর্থন করে বলেছেন, সরকারি কোষাগার থেকে তিনি সরাসরি অর্থ গ্রহণ করেননি এবং তেল বাবদ নিজে কোনো টাকা গ্রহণ করেননি। প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন ও তদারকির স্বার্থে অজ্ঞতাবশত গাড়িটি সরল বিশ্বাসে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছিল। একইসঙ্গে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে একই বিধিমালার ৩(খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে অভিযোগের গুরুত্ব ও অন্যান্য বিষয়াদি বিবেচনায় বিধি অনুযায়ী এস এম আশিকুর রহমানকে তিরস্কার সূচক লঘুদণ্ড প্রদান করা হলো।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রকল্প পরিচালক এস এম আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে চিঠি মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অর্থ ও পরিকল্পনা) মোঃ সাহেদ আলী বরাবর একটি চিঠি দেন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ আবদুর রউফ।
সেই চিঠিতে বলা হয়, প্রকল্প পরিচালক এস এম আশিকুর রহমান একটি গাড়ি ভাড়া করে প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ-১২-১৪১৬। ওই গাড়ির বিপরীতে জ্বালানিসহ অন্যান্য আনুতোষিক ব্যয়ের জন্য সরকারি কোষাগার থেকেই অর্থ উত্তোলন করছেন তিনি।
গাড়িটি এসএম আশিকুর রহমানের ব্যক্তিগত গাড়ি উল্লেখ করে চিঠিতে আরও জানানো হয়, এই গাড়ির জন্য তিনি নিয়মিত ভাড়া গ্রহণ করছেন, যা সরকারি বিধিবিধানের পরিপন্থি এবং দুর্নীতি ও অসদাচরণের শামিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।