অ্যান্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ করা হলে বা কোর্স শেষ না করলে দেহে সংক্রমণ ঘটানো জীবাণু আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ওই জীবাণুর ওপর অ্যান্টিবায়োটিকটি কাজ করে না। জীবাণুর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞান আখ্যা দিয়েছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ নামে।
বর্তমান সময়ে রোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অথবা নিজে থেকে কিনে অনেকেই অসুখ ভালো করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন। তার চেয়েও ভয়ংকর ব্যাপার হলো, অনেকে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন শুরু করে একটু ভালো হয়ে গেলে কোর্স পূর্ণ না করেই খাওয়া ছেড়ে দেন।
অ্যান্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ করা হলে বা কোর্স শেষ না করলে দেহে সংক্রমণ ঘটানো জীবাণু আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ওই জীবাণুর ওপর অ্যান্টিবায়োটিকটি কাজ করে না। জীবাণুর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞান আখ্যা দিয়েছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ নামে।
সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার না করলে শরীরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয় না। যে ব্যাকটেরিয়াগুলো বেঁচে থাকে সেগুলো রোগীর শরীরে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যার ফলে পরবর্তী সময়ে রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা হলে তখন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ আর কাজ করে না। এ অবস্থাকেই চিকিৎসাশাস্ত্রে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলা হয়ে থাকে।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ–তে যে পরিবর্তন হয়, তা ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস বা সংখ্যা হ্রাস করার জন্য ডিজাইন করা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব থেকে বাঁচতে সক্ষম করে তোলে। এই রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ে।
শুধু কোর্স শেষ করা নয়, নির্দিষ্ট ডোজেও যদি অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়া হয়, তাহলে সমস্যা হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ব্যক্তিকে দিনে দুটি করে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলো। এবার তিনি হয়তো কোনো কারণে দিনে একটি ওষুধ খেলেন, সে ক্ষেত্রেও হতে পারে সমস্যা। পরবর্তী সময়ে এই ওষুধ শরীরে কাজ না করতে পারে। তাই চিকিৎসক যেভাবে ওষুধটি খেতে বলবেন, সেই নিয়ম মেনে খেতে হবে। আর যদি এই ওষুধ খেতে ভুলে যান, তাহলে যখনই সেটা মনে পড়বে তখনই তা খেয়ে নিতে হবে। এই নিয়ম মেনে চললেই বিপদ এড়াতে পারবেন।
অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ শেষ না করা যেমন ক্ষতিকর, তেমনই প্রয়োজন ছাড়া নিজের বুদ্ধিতে এই ওষুধ খেলেও বিপদ! সে ক্ষেত্রে একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। তাই ভুলেও নিজের বুদ্ধিতে এই ওষুধ খাবেন না। কেবল চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে।
দেশে ব্যবহৃত বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। কেবল ভুল নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার এর জন্য দায়ী।
আবার অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়াও মেরে ফেলে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়। যার ফলে রোগীর মারাত্মক ডায়রিয়া, বদহজম, বমি বমি ভাব, জ্বর, পেটে ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার অপরিহার্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।