জুমবাংলা ডেস্ক: বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।
শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর সার্চ কমিটির তালিকা মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে বঙ্গভবন।
সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে দেশব্যাপী পরিচিত পান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। আগের দুই সার্চ কমিটিতেও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানাধীন ছয়াশী হাটনাইয়া গ্রামে।
২০২০ সালের ২৯ মে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান বিচারপতি এসএম কুদ্দুস।
মুসলিম চৌধুরী: বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুসলিম চৌধুরী। চট্টগ্রামে ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করা মুসলিম চৌধুরী সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী ৩ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে সচিব হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে যোগদান করে কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স এবং অর্থ বিভাগের উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে বিকম (সম্মান) ও এমকম এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিসটিংশনসহ এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
সোহরাব হোসাইন: বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সোহরাব হোসাইন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মো. সোহরাব হোসাইন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে, তিনি তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টরসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দল ও নাট্যচক্রের সদস্য ছিলেন।
ছহুল হোসাইন: ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন ছহুল হোসাইন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে তিনি অবসরে রয়েছেন। সিলেটের কাজিটুলায় জন্মগ্রহণকারী ছহুল হোসাইন দীর্ঘদিন জজশিপে চাকরি করেছেন। তিনি জেলা জজ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আইন সচিব হিসেবেও তিনি কর্মরত ছিলেন।
গত নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন। কিন্তু ওই আসনে মনোনয়ন পান জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন। তিনি নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক: কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারা সৈয়দ হক একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। উপন্যাসে অবদানের জন্য তিনি ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী।
আনোয়ারা ১৯৪০ সালের ৫ নভেম্বর যশোর জেলার চুড়িপট্টি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে আনোয়ারা ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যে পড়তে চাইলেও তার বাবার আগ্রহে তাকে মেডিকেলে ভর্তি হতে হয়। ১৯৬৫ সালে তিনি এমবিবিএস পাস করেন। পরে ১৯৭৩ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডন যান। তিনি সেখান থেকে ১৯৮২ সালে মনোবিজ্ঞানে এমআরসি ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৮৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিভাগে সহকারী প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকার মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও প্রভাষক। ১৯৯৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে অবসর নেন।
১৯৬৫ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি সৈয়দ হকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সৈয়দ হক ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এর আগে, রাষ্ট্রপতির নির্দেশে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের সুযোগ রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।