আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় নির্ভয়া কাণ্ডে দণ্ডিতদের গলায় পরানো হবে ফাঁসির দড়ি। সেজন্য তিহার জেলে শুরু হয়েছে ফাঁসির প্রস্তুতি। তবে ফাঁসি কার্যকর করার জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুত ভারতের উত্তর প্রদেশের জল্লাদ পবন কুমার।
উত্তর প্রদেশের মেরুতের বাসিন্দা জল্লাদ পবন কুমার জানালেন, ২০১২ সালে নির্ভয়া ধর্ষণ মামলার আসামিদের প্রতি কোনো সহানভূতি অনুভব করছি না। যাদের মৃত্যদণ্ড দেওয়া হচ্ছে তারা পশুর মতো, মানুষের মতো নয়।
৫৪ বছর বয়সী পবন আরও জানালেন, তারা নিষ্ঠুর মানুষ এবং সে কারণেই তারা তাদের জীবন হারাতে চলেছে।
তবে জেল সূত্রের জানিয়েছেন, তারা চারজনই নাকি এ বিষয়ে নির্বিকার। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও ইচ্ছাই যেন তাদের মধ্যে নেই।
নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডে চার অভিযুক্তের ফাঁসির দিন প্রথমে ঘোষণা হয়েছিল ২২ জানুয়ারি। কিন্তু দোষীরা আলাদা আলাদা করে প্রথমে রায় সংশোধনের আর্জি, তারপরে ফের রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার কৌশল নেওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। নতুন ফাঁসির দিন ধার্য হয় ১ ফেব্রুয়ারি।
নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডে দোষী বিনয় শর্মা ও মুকেশ কুমারের রায় সংশোধনের আর্জি খারিজ হলেও, পবন গুপ্ত ও অক্ষয়কুমার সিংহ এখনও সেই আর্জি জানায়নি। ফলে তাদের এখনও সেই আর্জি জানানোর সুযোগ রয়ে গিয়েছে।
যেহেতু অপরাধ চারজনেই একসঙ্গে করেছে, তাই আদালতের রায় মেনে তাদের একসঙ্গেই ফাঁসি দিতে হবে। ফলে যদি একজনের আবেদন বিচারাধীন থাকে, তাহলে বাকি তিনজনেরও ফাঁসি আটকে যাবে।
আইন অনুযায়ী, শেষ পর্যন্ত সকলের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হলেও আবেদন খারিজ ও ফাঁসির মধ্যে অন্তত ১৪ দিনের ব্যবধান থাকতে হবে। ফলে ফাঁসি ১ ফেব্রুয়ারিই হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
শনিবার দিল্লির কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই ধর্ষণ মামলায় মৃত্যু পরোয়ানার বিরুদ্ধে আসামীর প্রাণভিক্ষা এবং আইনজীবীর কোন যুক্তি এবং সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) আবেদন নিষ্পত্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
অতিরিক্ত দায়রা জজ অজয় কুমার জৈন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ধর্ষণ মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে আইনজীবী সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, ছবি, ডায়েরি এবং পেইন্টিং জমা দিয়েছে তিহার জেলে।
দিল্লি পুলিশের পক্ষে হাজির হয়ে সরকারি আইনজীবী আদালতকে বলেছিলেন, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সমস্ত প্রাসঙ্গিক দলিল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ দেয়া হয়েছে।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও ভয়াবহ নির্যাতন করেছিল ছয় অভিযুক্ত। ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যায় নির্ভয়া। অভিযুক্ত ৬ জনকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীনই তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করেন রাম সিংহ।
অন্য অভিযুক্ত অপরাধের সময় ছিল নাবালক। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড তাকে সর্বোচ্চ তিন বছর হোমে রেখে সংশোধনের নির্দেশ দেয়। সেই সাজার মেয়াদ শেষে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে তখনকার সেই নাবালক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।