জুমবাংলা ডেস্ক : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হওয়ার ১ বছর যেতে না যেতেই মসজিদের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে মসজিদ নির্মাণ করায় বিভিন্ন স্থান দিয়ে পানি চুয়ে চুয়ে ভেতরে প্রবেশ করছে। ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে মডেল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এটি উপজেলা চত্বরে প্রায় ৪০ শতক জমির ওপরে তৃতীয় তলা মসজিদ। এটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১১ কোটি টাকা। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে গণপূর্ত বিভাগের আওতায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি নকশা অনুযায়ী কাজ সমাপ্ত করে প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করে। ১৬ মার্চ ২০২৩- এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি নির্মাণের এক বছর যেতে না যেতেই মসজিদটির সিঁড়ির নিচের গোডাউন রুমটির ৭-৮ জায়গায় ফাটল ধরেছে। ফলে চুইয়ে পানি ঝরছে বিল্ডিংয়ের গা ঘেঁষে।
অন্যদিকে মসজিদটির নিচতলার পার্কিং এরিয়ার উপরের ছাদটি পূর্ব পাশে পুরো ছাদের দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে লম্বায় ফেটে গেছে। ফলে পুরো ছাদটি ড্যাম হয়ে গেছে। এটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় পুরো মসজিদটিতে বিদ্যুৎ ওয়ারিংয়ের প্রচুর সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে বিদ্যুতের সুইচ দিলেই স্পার্কিং শুরু হয়ে যায়। এছাড়াও নিম্মমানের লাইটিংয়ের কারণে বেশিরভাগ ভাল্ব নিয়মিতভাবে জ্বলে না।
মসজিদটির বাইরে প্রটেকশন ওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি। ফলে মসজিদটির বাইরের অংশ অরক্ষিত। প্রতিনিয়ত কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণী সহজেই প্রবেশ করে অপরিষ্কার করে তোলে। আবার ছাদে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ছাদের ওপরে পানি জমে থাকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
ফুলবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মজিবর রহমান বলেন, এ জন্য অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়ী। এটি নির্মাণের সময় কোনো তদারকি ছিলো না। আমি তদন্ত করে এই অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করছি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যাহ আল ফারুক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দু’মাস হলো কুড়িগ্রামে যোগদান করেছি। দ্রুত মসজিদটি ভিজিট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
কুড়িগ্রাম ২ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মো. হামিদুল হক খন্দকার জানান, আমি মসজিদটি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। এটি নির্মাণ কাজে যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জানিয়েছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।