নেপালে আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দুই জনপ্রিয় নেতা একটি জোট গঠন করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই জোট দেশের পুরনো এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টির (আরএসপি) কর্মকর্তারা ২৮ ডিসেম্বর রবিবার জানিয়েছেন, কাঠমান্ডুর মেয়র ও সাবেক র্যাপার বালেন (বেন্দ্র শাহ) আরএসপির জোটে যোগ দিয়েছেন। সাবেক টেলিভিশন উপস্থাপক ও রাজনীতিবিদ রবি লামিচানে এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চুক্তি অনুযায়ী, ৫ মার্চের নির্বাচনে আরএসপি জয়ী হলে, ৩৫ বছর বয়সি বালেন প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং ৪৮ বছর বয়সি লামিচানে দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বালেন সেপ্টেম্বর মাসে এক আন্দোলনের পর আলোচনায় আসেন এবং তরুণদের ওই আন্দোলনের অবরুদ্ধ নেতা হিসেবে পরিচিত হন। তিনি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ হয়ে নির্বাচন তদারকি করার কাজও করেন। তবে কিছু সমালোচক বালেনের আন্দোলনের সময় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কারণ তিনি কমই প্রকাশ্যে এসেছেন এবং মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থকদের সাথে কথা বলেছেন।
রবি লামিচানে ২০২২ সালের নির্বাচনের আগে আরএসপি প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচারের মাধ্যমে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে বর্তমানে তিনি ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সমবায়ভিত্তিক তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগে জামিনে রয়েছেন।
এই জোটের উভয় নেতা দাবি করেছেন যে, তারা আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের নেতৃত্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বর মাসে হওয়া আন্দোলনের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবেন। ওই আন্দোলনে ৭৭ জন নিহত হন এবং এর ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, প্রায় ৩ কোটি জনসংখ্যার নেপালে ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ। আন্দোলনের পর প্রায় ১০ লাখ নতুন ভোটার যোগ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই তরুণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিপিন অধিকারী বলেন, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলো তরুণ ভোটারদের হারানোর শঙ্কায় রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, বালেন ও তার তরুণ সমর্থকদের নিজেদের দলে আনা আরএসপির জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।
গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে শাসন করা ওলির কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউএমএল) এবং মধ্যপন্থি নেপালি কংগ্রেস দলের জন্য এই নতুন জোট একটা বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
তবে নেপালি কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রকাশ শরণ মহত বলেছেন, বালেন ও লামিচানে উভয়েই “বিতর্কিত” নেতা এবং তাদের জোটের প্রভাব সীমিত থাকবে। তিনি মনে করেন, শেষ পর্যন্ত মানুষ পুরোনো এবং অভিজ্ঞ দলগুলোই বেছে নেবে, এবং এই জোটে কোনো বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে না।
সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


