জুমবাংলা ডেস্ক : বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত নিদ্রা সমুদ্র সৈকত, যা স্থানীয়ভাবে ‘নিদ্রার চর’ নামেও পরিচিত। অপরূপ এই সৈকতটি বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন স্থান হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই সৈকতটির একদিকে সাগর, অন্যদিকে নদী এবং মাঝখানে কেওড়া ও ঝাউবনে ঘেরা সবুজ পরিবেশ। এখানকার জোয়ার-ভাঁটার খেলা, সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ প্রান্তর এবং শ্বাসমূলের সমারোহ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফ রহমান বলেন, নিদ্রা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য পর্যটকদের সহজেই আকর্ষণ করতে সক্ষম। এখানে পর্যটন অবকাঠামো উন্নত করা গেলে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, নিদ্রা সৈকতকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।
নিদ্রা সৈকতের কাছেই রয়েছে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত, যেখানে প্রতি বছর জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন টেংরাগিরি, ফাতরার চর ও সোনাকাটা ইকোপার্কও এই এলাকায় অবস্থিত। সব মিলিয়ে নিদ্রা সৈকত ও এর আশপাশের এলাকা পর্যটকদের জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
সার্বিকভাবে, নিদ্রা সমুদ্র সৈকত তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ এবং আশেপাশের পর্যটন স্থানের সমন্বয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
বরগুনা জেলা পর্যটন উদ্যোক্তা উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফ খান বলেন, আমাদের নিদ্রা সৈকত শুধু বরগুনা নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জন্য একটি গর্বের জায়গা হতে পারে। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ, কেওড়াবন, শ্বাসমূলের জঙ্গল আর শান্ত সমুদ্র—সব মিলিয়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্য রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়দের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবক কমিটি করেছি। সৈকত পরিষ্কার রাখা, আগত পর্যটকদের গাইড দেওয়া এবং নিরাপত্তার কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এখানে স্থায়ী অবকাঠামো দরকার। যেমন: শৌচাগার, বিশ্রামাগার, পর্যটক তথ্যকেন্দ্র, হোটেল-মোটেল ইত্যাদি। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা পর্যায়ে চিঠিপত্রও দিয়েছি।
আরিফ খানের মতে, এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রচারের অভাব। যদি পর্যটন বোর্ড বা জেলা প্রশাসন এটিকে ‘সরকারি পর্যটন স্পট’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে এখানে বিনিয়োগ আসবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়কপথে সরাসরি বাসে বা নিজস্ব গাড়িতে তালতলী উপজেলা হয়ে নিদ্রা সৈকতে যাওয়া যায়। নৌপথে বরগুনা বা আমতলীর লঞ্চে এসে ভাড়া গাড়ি বা মোটরসাইকেলে তালতলী হয়ে সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত নিদ্রা সৈকতে পৌঁছানো সম্ভব।
তালতলী শহরের আবাসিক হোটেল ও জেলা পরিষদ ডাক বাংলোয় রাত কাটানোর ব্যবস্থা রয়েছে।-ইউএনবি নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।