নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: জুনিয়র কর্তৃক হেনস্থার শিকার হয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) সাব মিয়া সোহেল নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে অজ্ঞান অবস্থায় নোয়াখালী সদর হসপিটালে ভর্তি করা হয় তাকে। হেনস্থার শিকার সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগ উঠেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সোহেলকে নীলদিঘী পাড়ে ডেকে পাঠায় ফলিত গণিত বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান দূর্জয়। পরে সোহেল তার সহপাঠীদের নিয়ে সেখানে গেলে তার দেওয়া স্ট্যাটাসের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সোহেলের সহপাঠীরা জানান, এ সময় দুর্জয়ের প্রেমিকা মারিয়াম সিদ্দিকা জেমি নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী তার সিনিয়র সোহেলকে কান ধরিয়ে হাঁটায় এবং লাঞ্ছনা করে। জেমি ও সোহেল একই বিভাগের শিক্ষার্থী। এ সময় সোহেল তার দেওয়া স্ট্যাটাসের জন্য ক্ষমা চাইলেও তার কথা গ্রাহ্য না করে দুর্জয় তার দলবল নিয়ে সোহেলের ওপর হামলা চালান।
সহপাঠীরা আরও জানান, দুর্জয় ও জেমির পেছন থেকে তোলা একটি অস্পষ্ট ছবি সোহেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। এই ছবিকে কেন্দ্র করে সোহেলের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন দুর্জয় ও তার সঙ্গীরা।
সহপাঠীরা জানান, জুনিয়র কর্তৃক লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে বিকালে সোহেল আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে তার সহপাঠীরা তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর রাতে জ্ঞান ফিরলেও তিনি কোনও কথা বলেননি।
এই হামলার ঘটনায় সাকিবুল হাসান দূর্জয়ের সঙ্গে সমাজকর্ম ২০১৮-১৯ বর্ষের সোহান, বাংলা বিভাগের তানভীর মাহতাব সামিসহ অজ্ঞাতনামা প্রায় ১০ জন ওই হামলায় অংশ নেন বলে সোহেলের সহপাঠীরা জানান।
এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলে অভিযুক্ত দুর্জয় জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ভাইরাল হওয়ার কারণে তার ও জেমির সম্পর্কটির ব্যাপারে জেমির পরিবার অবগত হন। জেমির পরিবার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন জেমি। এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য সোহেলকে ডাকা হয়, তবে মারধরের ও লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে লাঞ্ছিত করার ব্যাপারটি নিশ্চিত করার জন্য জেমির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।
ঘটনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সোহেলের একাধিক সহপাঠী জানান, আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত সকল হামলাকারীর বিচার চাই এবং বিচারের দাবিতে বিভাগের ক্লাস পরিক্ষা বর্জন করার কথাও জানান কয়েকজন সহপাঠী।
এই বিষয়ে ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিনি রাতেই সদর হাসপাতালে গিয়ে সোহেলকে দেখে এসেছেন।
এছাড়া সোহেলের সুচিকিৎসার ব্যাপারটিও নিশ্চিত করার কথা বলেন এবং হামলায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।
হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, এ হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।