জুমবাংলা ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই আফ্রিকা মহাদেশের কৃষিজমিতে তাণ্ডব চালিয়ে এবার দক্ষিণ এশিয়ার দিকে ধেয়ে আসছে পঙ্গপালের দুটি ঝাঁক। এরই মধ্যে একটি ঝাঁক পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। আরেকটি ঝাঁক ভারত মহাসাগর পাড়ি দিচ্ছে।

ভারতের কৃষিজমিতে হানা দেওয়ার পর এরা বাংলাদেশের দিকে আসতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু। তবে শস্যখেকো পতঙ্গ পঙ্গপাল বাংলাদেশে হানা দেওয়ার শঙ্কা দেখছেন না কৃষি সংশ্লিষ্ট কেউ। এমনকি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, এখানে পতঙ্গটির আক্রমণের ঝুঁকিও নেই।
‘বাংলাদেশে পঙ্গপাল হানা দেওয়ার শঙ্কা রয়েছে’- সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্বাপর সময়ে ভারত ও পাকিস্তানে ফড়িং গোত্রের এই পতঙ্গের আক্রমণ ঘটলেও তখন বাংলাদেশে তা ছড়ায়নি। বিগত ৫০ বছরেও এমনটি ঘটেনি। কারণ দেশের আবহাওয়াই পঙ্গপাল বিরোধী।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পঙ্গপাল ঢুকে পড়বে। এটি আমাদের নজরে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, পঙ্গপালগুলো ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে বাংলাদেশে হানা দেবে। এই কথার কোন ভিত্তি নেই। বাংলাদেশে পঙ্গপাল হানা দেওয়ার শঙ্কা দেখছি না।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলার কারণ ব্যাখ্যা করে কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি তাদের মূল প্রতিবেদনটিও দেখেছি। সেখানে এমন কথা উল্লেখ আছে, ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে পঙ্গপাল হানা দেবে। ভারত মহাসাগর অতিক্রম করতে হলে তাদের উৎপত্তিস্থল হতে হবে ফিলিপাইন অথবা সিঙ্গাপুর। কিন্তু এই পতঙ্গপালের আসার কথা আফ্রিকা বা সৌদি আরব থেকে। আর আফ্রিকা থেকে আসতে হলে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ তাদের প্রতিবেদনের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।’
নাসিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘ভারতে পঙ্গপাল হানা দিলেও সেটা বাংলাদেশে আসবে না। কারণ পঙ্গপাল ব্রিডিং করতে করতে এগিয়ে আসা। তা করতে উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন। ব্রিডিং করতে হলে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির উপরে থাকতে হবে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা সবসময় এর চেয়ে কম থাকে। আবার ব্রিডিংয়ের ক্ষেত্রে আদ্রতা হতে হবে ৫০ ডিগ্রির নিচে, বাংলাদেশে এটি বেশিরভাগ সময় ৭০ ডিগ্রির ওপরে থাকে। দেশের আবহাওয়া মরুভূমির মতো না হওয়ায় এখানে পঙ্গপাল হানা দেওয়ার কোন শঙ্কা আমরা দেখছি না। আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, দেশের আবহাওয়াই পঙ্গপাল বিরোধী।’
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পঙ্গপাল উৎপাতের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। এতে আফ্রিকাসহ বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে খাদ্যাভাবে ফেলে দিতে পারে। পঙ্গপাল উৎপাতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাত কোটি ডলারের তহবিল চেয়ে আহ্বান জানিয়েছে এফএও এবং জাতিসংঘ।
গত ২১ এপ্রিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মরুর পঙ্গপাল যারা এ বসন্তে পূর্ব আফ্রিকা, ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইরানে হানা দিয়েছে। আফ্রো-এশীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও তারা বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



