বিংশ শতাব্দীর তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার কোয়ান্টাম মেকানিকস। শতাব্দী প্রাচীন ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিকস পরমাণু ও পরমাণুর চেয়ে ছোট অতিপারমাণবিক কণার গতিপ্রকৃতি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
পরমাণুর গঠন ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে নতুন নতুন ধারণা তৈরি হবার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য একটা নতুন গাণিতিক প্রক্রিয়ার যে ভীষণ দরকার, তা বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ম্যাক্স প্ল্যাংক, ম্যাক্স বর্ন, নীলস বোরসহ যে কজন বিজ্ঞানীর হাতে কোয়ান্টাম মেকানিকসের জন্ম ও বেড়ে ওঠা, পল ডিরাক তাঁদের অন্যতম।
কোয়ান্টাম মেকানিকসের দুটো প্রধান সমীকরণের একটি হলো শ্রোডিঙ্গার সমীকরণ এবং অন্যটি ডিরাক সমীকরণ। কোয়ান্টাম মেকানিকসে আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির প্রয়োগ করে রিলেটিভিস্টিক কোয়ান্টাম মেকানিকসের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন পল ডিরাক। কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিকসের সূচনা হয় ডিরাকের হাতে। পরে রিচার্ড ফাইনম্যান ইলেকট্রোডায়নামিকসের সম্প্রসারণ করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে অ্যান্টিম্যাটার বা প্রতি-পদার্থের ধারণা ডিরাকের সমীকরণ থেকে উদ্ভূত। ১৯২৮ সালে ডিরাকই প্রথম পজিট্রন কণার অস্তিত্বের ধারণা দেন। পরে ১৯৩২ সালে পরীক্ষাগারে এই পজিট্রন আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী কার্ল অ্যান্ডারসন। ১৯৩০ সালে প্রকাশিত পল ডিরাকের বই প্রিন্সিপলস অব কোয়ান্টাম মেকানিকসকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ‘বাইবেল’ মনে করা হয়।
কারণ ওটাই কোয়ান্টাম মেকানিকসের প্রথম সার্থক বই। কোয়ান্টাম মেকানিকসের গাণিতিক ভিত্তির স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৩৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় আরউইর শ্রোডিঙ্গার ও পল ডিরাককে। পল ডিরাকের বয়স তখন মাত্র ৩১ বছর। নোবেল পুরষ্কারের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী নোবেলবিজয়ী তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হলেন পল ডিরাক।
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের গাণিতিক ভিত্তি রচনায় পল ডিরাকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুযায়ী মৌলিক কণাগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যায়—বোসন আর ফার্মিয়ন। বোসন কণাগুলো সত্যেন বসু ও আলবার্ট আইনস্টাইনের ‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান’ মেনে চলে, আর ফার্মিয়ন কণাগুলো মেনে চলে এনরিকো ফার্মি ও পল ডিরাকের ‘ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান’।
ত্রিশ বছর বয়স হবার আগেই ডিরাক হয়ে ওঠেন গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের উজ্জ্বল নক্ষত্র। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৩২ সালে মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লুকাসিয়ান প্রফেসর পদে যোগ দেন। যে পদে স্যার আইজাক নিউটন অধিষ্ঠিত ছিলেন এক সময়। পরের বছর নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পর খ্যাতির শিখরে উঠে যান পল ডিরাক। অথচ এই খ্যাতি তিনি কখনোই চাননি। কারণ তিনি ছিলেন স্মরণকালের সবচেয়ে প্রচারবিমুখ পদার্থবিজ্ঞানী। প্রয়োজনের বাইরে তিনি কারো সঙ্গে একটা কথাও বলতেন না।
ডিরাক প্রথমে কাজ শুরু করেছিলেন প্রফেসর কানিংহামের অধীনে। কিন্তু কানিংহামের ছাত্রসংখ্যা ছিল অনেক। তাই ডিরাক চলে আসেন প্রফেসর রালফ ফাউলারের অধীনে। কোয়ান্টাম থিওরির ওপর কাজ শুরু করেন। দুবছরের মধ্যে তিনি ছয়টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। এর পরের বছর আরও পাঁচটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ১৯২৬ সালে তিনি গণিতে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করলেন।
ডক্টরেট থিসিস সাবমিট করার আগেই তাঁর ১১টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যা সেই সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাশালী পদার্থবিদদের জন্যেও খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। ডিরাকের পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিল কোয়ান্টাম মেকানিকস।
পিএইচডির পর তিনি কোপেনহেগেনে গিয়ে নীলস বোরের সঙ্গে কাজ করেন কিছুদিন। বোর ডিরাককে কয়েকদিন দেখেই বুঝতে পারেন, ছেলেটি জানে প্রচুর, কিন্তু বলে না কিছুই। ডেনমার্ক থেকে জার্মানির গোটিংগেনে গেলেন ১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেখানে তিনি পরিচিত হলেন রবার্ট ওপেনহেইমার ও ম্যাক্স বর্নের সঙ্গে। সেখান থেকে ফিরে এসে যোগ দিলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে সেন্ট জোনস কলেজের ফেলো হিসেবে। এসময় তিনি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
ডিরাক প্রথমে কাজ শুরু করেছিলেন প্রফেসর কানিংহামের অধীনে। কিন্তু কানিংহামের ছাত্রসংখ্যা ছিল অনেক। তাই ডিরাক চলে আসেন প্রফেসর রালফ ফাউলারের অধীনে। কোয়ান্টাম থিওরির ওপর কাজ শুরু করেন। দুবছরের মধ্যে তিনি ছয়টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।
এর পরের বছর আরও পাঁচটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ১৯২৬ সালে তিনি গণিতে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করলেন। ডক্টরেট থিসিস সাবমিট করার আগেই তাঁর ১১টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যা সেই সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাশালী পদার্থবিদদের জন্যেও খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। ডিরাকের পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিল কোয়ান্টাম মেকানিকস।
পিএইচডির পর তিনি কোপেনহেগেনে গিয়ে নীলস বোরের সঙ্গে কাজ করেন কিছুদিন। বোর ডিরাককে কয়েকদিন দেখেই বুঝতে পারেন, ছেলেটি জানে প্রচুর, কিন্তু বলে না কিছুই। ডেনমার্ক থেকে জার্মানির গোটিংগেনে গেলেন ১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেখানে তিনি পরিচিত হলেন রবার্ট ওপেনহেইমার ও ম্যাক্স বর্নের সঙ্গে। সেখান থেকে ফিরে এসে যোগ দিলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে সেন্ট জোনস কলেজের ফেলো হিসেবে। এসময় তিনি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।