জুমবাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম দোহাজারী-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
নতুন রেলপথের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে দোহাজারী-কক্সবাজার ঘুনদুম সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ইতোমধ্যে ৩৩ শতাংশ সম্পন্ন করেছেন নিয়োজিত দেশী-বিদেশী ঠিকাদাররা। ফলে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডোরে যুক্ত হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রকল্পের শ্রমিকরা সকাল-সন্ধ্যা কাজ করছেন। রেলপথ বসানোর জন্য মাটির রাস্তা থেকে শুরু করে ব্রিজ, কালভার্ট তৈরির কাজও দিন-রাত করছেন তারা।
প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, যে গতিতে কাজ চলছে তাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে।
২০২২ সালের জুন মাসেই এই পথে ট্রেন চলবে বলে জানান তিনি।
তবে রেলওয়ের অন্য সূত্রগুলো বলছে, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু জটিলতা এখনো থেকে যাওয়ায় তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ করার পথে বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, এডিবি ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২৯ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম ধাপে রেলপথ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে যৌথভাবে চীনের দু’টি এবং বাংলাদেশের দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সাথে রেলওয়ের চুক্তি হয় বলে জানা গেছে।
২ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকায় প্রথম লটে কাজের চুক্তি হয়েছিল চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) এবং বাংলাদেশের তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানির মধ্যে। দ্বিতীয় লটে ৩ হাজার ৫০২ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকায় কাজের চুক্তি হয় চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) এবং দেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সাথে।
চুক্তির শর্তানুযায়ী কাজ শুরু হওয়ার তিন বছরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পরই দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের সীমান্ত ঘুনদুম পর্যন্ত অবশিষ্ট ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মফিজুর রহমান।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম-দোহাজারী ভায়া ঘুনদুম রেললাইন প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটি ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে আসছে ৪ হাজার ৯১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা এবং এডিবির ঋণ ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
প্রকল্পে রয়েছে ৯টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট ব্রিজ, ১৪৯টি কংক্রিট বক্স কালভার্ট, ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট (পাইপ কালভার্ট)। এ ছাড়াও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন রেললাইনে অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা সংযোজন করা হবে। আর কক্সবাজার সৈকতে ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হবে অত্যাধুনিক রেলস্টেশন। প্রথম লটের কাজের মধ্যে রয়েছে চুনতি অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে বন্যহাতি অবাধে চলাচলের জন্য চারটি নিরাপদ পথ তৈরি (এর মধ্যে দু’টি ওভার ও দু’টি আন্ডার পাস) রেলপথটি তৈরি করতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উভয় দিকে প্রায় ১৩৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।