জুমবাংলা ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি টুঙ্গিপাড়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জন্মেছেন টুঙ্গিপাড়ার মাটিতেই। এখানেই চির নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর সমাধিকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়া এখন বাঙালি জাতির তীর্থভূমি।
এই তীর্থভূমি টুঙ্গিপাড়ার সঙ্গে রাজধানীকে এক সূঁতোয় বেঁধে দিয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু যোগাযোগকে করে দিয়েছে সহজ। তাইতো আজ রাজধানী থেকে যাত্রা করে জীবনে প্রথম পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার অনেকেই।
রবিবার প্রথম স্বপ্নের পদ্মা সেতু পার হতে পেরে গর্বিত ও আনন্দিত তারা। তাদের বহণ করা প্রথম বাসটি পদ্মা সেতুতে ওঠার পর যাত্রীরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন। সবাই আগ্রহভরে পদ্মা সেতু প্রত্যক্ষ করেছেন। এ যেন জীবনের অনন্য প্রাপ্তি। পদ্মা সেতুর সাজ-সজ্জা তাদের মন কেড়েছে। তারা পদ্মা সেতুর রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এসব মানুষ।
দোলা পরিবহনের যাত্রী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের আবুল মেহেদী হাসান (৬২) বলেন, প্রথম পদ্মা সেতু পার হতে পেরে আমি গর্বিত। কারণ আমি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম। আমাদের ভোটে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। নিজম্ব অর্থায়নে তাঁর সাহসী পদেক্ষেপে এই সেতু নির্মিত হয়েছে। আমাদের এলাকার সহাসী বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার জন্য আমরা গর্ববোধ করি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
দোলা পরিবহনের সুপারভাইজার রিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ভোর ৫টায় আমরা ঢাকার গুলিস্থান থেকে গাড়ি ছেড়েছি। প্রথম দিন পদ্মা সেতু দেখতে আসা উৎসুক মানুষের ভীড় ছিল। এ কারণে সেখানে যানজটের সৃষ্টি হয়। পদ্মা সেতুতে গাড়ি ওঠার সাথে-সাথে বাসের যাত্রীরা সেই কষ্ট ভুলে গেছে। তারা অপলক দৃষ্টিতে পদ্মা সেতুর সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। পদ্মা সেতু দিয়ে যাত্রীরা সহজেই কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। এতে দুর্ভোগ কমছে।
এছাড়া, টুঙ্গিপাড়া পরিবহনের যাত্রী পাটগাতী গ্রামের শ্যামল মালো (৫২) বলেন, ৮৪ সালে লঞ্চে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়া আসতে দুই দিন লেগে যেতো। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে পশ্চাদপদ টুঙ্গিপাড়ায় সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। তারপর তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। আমি প্রথম দিনই পদ্মা সেতু পার হয়ে বাড়ি এসেছি। এই আনন্দটাই আলাদা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে সারা বিশ্বকে দেখিয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের চালক মেহেদী হাসান বলেন, পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় ভীড়ের কারণে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। যখনই গাড়ি পদ্মা সেতুতে উঠেছে। তখনই যাত্রীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজ শেখ বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের আত্মপরিচয়। আজকে সেতু এলাকায় জ্যাম ছিল। গাড়ি পদ্মা সেতুতে ওঠার পর আনন্দে গর্বে বুক ভরে গেছে। জ্যামের সময় বাদ দিলে গাড়িতে জার্নি করেছি মাত্র আড়াই ঘন্টা। তারপরও এখন এই সেতুৃ দিয়ে সরাসরি পণ্য ঢাকা নিয়ে যাবো। এতে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে লাভবান হবো।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের বলেন, টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গর্বিত জন্মভূমি। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্মেছেন টুঙ্গিপাড়ার মাটিতেই। তিনি টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসন থেকে বার-বার এমপি নির্বাচিত হয়েছে। পশ্চাদপদ টুঙ্গিপাড়া ঢাকার কাছের একটি উপজেলা। কিন্তু পদ্মা নদীর কারণে এটি রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে দিয়েছেন। তাই এটি এখন আলোকিত জনপদে পরিনত হবে। এখানে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। মানুষের আয় বাড়বে। শিল্পায়ন হবে। টুঙ্গিপাড়ার মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, শৈশব থেকে বঙ্গবন্ধুর শত সহ¯্র স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে টুঙ্গিপাড়ায়। এ মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন সর্বকালের সরাব সেরা বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সমাধিকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়া এখন নবআলোকে উদ্ভাসিত একটি জনপদ। এটি এখন বাঙ্গালী জাতির তীর্থভূমি। পদ্মা সেতু ঢাকার সাথে টুঙ্গিপাড়ার যোগাযোগকে সহজ করে দিয়েছে। এ কারণে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের পদচারণা বাড়বে। মানুষ বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ পরিদর্শন ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দিনে-দিনেই বাড়ি ফিরতে পারবেন।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।