পবিত্র কাবা শরিফ চত্বরে প্রবেশ সাময়িক বন্ধ, চলছে ধোঁয়া-মোছার কাজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনে মহামারী রূপ নেওয়ার পর এখন বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে বিশ্বের কমপক্ষে ৮০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস।

এদিকে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কার ঐতিহাসিক মসজিদুল হারামে কাবা শরিফ চত্বরে প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কাবা শরিফ ধোঁয়া-মোছার কাজ চলছে বলে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক সানডে এক্সপ্রেস এবং ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

পবীত্র কাবা শরিফ ধোঁয়া-মোছার কাজ চলছে

সানডে এক্সেপ্রেস বলছে, ইসলামি পণ্ডিত ডা. ইয়াসির কাধি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় বলেছেন, সুবহান আল্লাহ, পবিত্র কাবা এখন জনমানবশূন্য। তাওয়াফ বন্ধ রয়েছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে কর্তৃপক্ষ হেরেম শরিফ পরিষ্কার করছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন।

তবে কাবা শরিফকে প্রথমবারের মতো জনমানবশূন্য দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। টুইটারে একজন লিখেছেন, আমার জীবনে প্রথমবারের মতো কাবা শরিফকে খালি দেখলাম। আরেকজন লিখেছেন, একেবারেই বিরল ঘটনা।

সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দাদের জন্যও ওমরাহ হজ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। নতুন ধরণের করোনাভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য সতর্কতা হিসাবে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

গত সপ্তাহেই বিদেশি নাগরিকদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ পালন ও ধর্মীয় সব কর্মকাণ্ড বন্ধের বিরল ঘোষণা দেয় সৌদি আরব।

ওমরাহ হজ করার জন্য জমা নেয়া অর্থ এজেন্সির মাধ্যমে ফেরত দেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া পর্যটন ভিসা থাকা সত্ত্বেও করোনাভাইরাস ধরা পরেছে এমন এলাকা থেকে আসা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সৌদি আরবে প্রবেশ না করতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দেশগুলির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করার পাশাপাশি পবিত্র নগরী মদিনায়ও প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।

হজের পর ওমরাহকে প্রধান ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে দেখা হয়। যদিও হজের অনেক অনুষঙ্গ এখানে রয়েছে, তবে এটি কিছুটা সংক্ষিপ্ত হয়ে থাকে।

মক্কা এবং মদিনা হচ্ছে ইসলামের অনুসারীদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র দুটি স্থান। ইসলামের নবী মুহাম্মদের জন্ম মক্কা নগরীতে। আর তাঁর কবর মদিনা শহরে। তাই মদিনায়ও প্রচুর মুসলমান ভ্রমণ করেন ধর্মীয় কারণে।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাময়িকভাবে এসব নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে কতদিন এসব নিষেধাজ্ঞা ও স্থগিতাদেশ থাকবে, সেটি বলা হয়নি।

গত সোমবার কোভিড-নাইনটিন করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম রোগী পাওয়া ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। ওই নাগরিক কিছুদিন আগে ইরান ভ্রমণ করেছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানেই সবচেয়ে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।