পবিত্র রমজান এক করেছে স্পেনের মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে। শান্তির ধর্ম ইসলামের বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বস্তরে। স্পেনের বার্সেলোনায় তাই ইফতারে একসঙ্গে দেখা মিলছে মুসলিম ও খ্রিস্টান দুই ধর্মের মানুষেরই। খ্রিস্টানরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে, বড় পরিসরে, বিনামূল্যে ইফতারের জন্য, উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তাদের গির্জা। আর এতেই গড়ে উঠেছে ধর্মীয় সম্প্রীতি।
চলছে ইফতারের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পাত্রে পাত্রে পরিবেশন করা হচ্ছে বাহারি ইফতার। দেখে মনে হতে পারে, মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ। একদমই ঘরোয়া পরিবেশ। কিন্তু তা নয়, এটি স্পেনের বার্সেলোনার চিত্র। আরও অবাক লাগবে, যদি বলি- এটি একটি গির্জা। বাস্তবে এ বছর গির্জাতেই ইফতার করছেন, বার্সেলোনার মুসলিমরা।
আজানের ধ্বনিতে মুখরিত পুরো প্রাঙ্গণ। বিনা সংকোচে প্রাণ খুলে মহান আল্লাহকে ডাকছেন মুসলিমরা। ইফতারের আগে এ যেন সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত। আজান শেষে সবাই সারাদিনের সিয়াম পালন শেষে খোলেন রোজা।
আগত মুসল্লিরা বলেন, আমি মুসলিম তিনি ক্যাথলিক খ্রিস্টান, এটা বড় পরিচয় নয়। বড় পরিচয় হলো আমরা মানুষ। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টিই হচ্ছে পবিত্র ধর্ম ইসলামের বৈশিষ্ট্য। রমজান আমাদের সংযমের শিক্ষা দেয়। আমরা সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছি কিনা সেটাই বড় কথা। মসজিদ আল্লাহর ঘর। খ্রিস্টানরা মনে করেন, গির্জাও স্রষ্টার ঘর। তাই তারা মুসলিমদের এ সুযোগ দিয়েছেন।
এখানে উপস্থিত সবাই বলছেন, ধর্মীয় বিভেদ ভুলে তারা এক কাতারে এসেছেন। বিভেদ পৃথিবী থেকে দূর হয়ে গেলে, কমে আসবে সংঘর্ষ। মানুষের জন্য শান্তির হবে পুরো ধরণী।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে, একসঙ্গে অনেক মানুষ সমবেত হতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নির্দিষ্ট বড় জায়গার অভাবে মুসলিমরা এক হতে পারছিলেন না। তাই গির্জায় বেশি মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন একসঙ্গে ইফতার করতে পারেন এ-জন্যই এটি খুলে দেয়া হয়েছে, জানান সান্তা আন্না গির্জার ফাদার পিও সানচেজ।
তিনি বলেন, ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন ভাষার রাজনীতিবিদরা যদি এক হয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন তাহলে আমরাও পারি। আমরা সম্প্রীতির সেই নিদর্শন সৃষ্টি করলাম।
অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন মুসলিম প্রতিদিন বিকেলে জড়ো হন এখানে। করেন দোয়া মোনাজাত, ইফতার। যাদের বেশিরভাগই গৃহহীন। বিভিন্ন দেশ থেকে স্পেনে আসা শরণার্থী ছাড়াও স্থানীয় মুসলিমরাও উপস্থিত হন এখানে।
বার্সেলোনায় ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে গির্জায় এমন আয়োজন ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে সবার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে যা ফলাও করে প্রচার হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।