জুমবাংলা ডেস্ক: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে বেদানা চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন হারুন মোল্লা নামের একজন মাছ ব্যবসায়ী। বর্তমানে উপজেলার বিশিয়া গ্রামে বাড়ির আশেপাশের পরিত্যক্ত জায়গায় এই ফল চাষ করে দারুণ সফল মুনছান মোল্লার ছেলে হারুন। তিনি শুধু বাড়ির আশেপাশেই নয়, জমিতেও গড়ে তুলেছেন এই আনারের বাগান। আগ্রহী বেদানার বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিবেদক আব্দুর রউফ রিপন-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ডালিম/বেদানা/আনার চাষ হয়ে আসছে। এই ফলে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি ও ভেষজ গুণ রয়েছে। এছাড়া দেশে উৎপাদন কম হওয়ায় ডালিম প্রচুর পরিমাণ আমদানি করা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে। কিন্তু বর্তমানে দেশের মাটিতে এই ফলের চাষ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার কারণে খুব সহজেই স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। দিন দিন রাণীনগর উপজেলায় লাভজনক ড্র্গন, মাল্টা, বেদানাসহ বিভিন্ন ফলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চাষি হারুন মোল্লা বলেন, আমি প্রথমে ভারতে এই বেদানার চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হই। এরপর চারা সংগ্রহ করে এক বছর আগে প্রথমে বাড়ির আশেপাশে ও পরে আরও এক বিঘা জমিতে চাষ সম্প্রসারিত করি। বর্তমানে আমার বাগানে থাকা ১০০ গাছ থেকে বেদানা সংগ্রহ শুরু করেছি। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার বেদানা বিক্রি করেছি। বাগানে আরও ১৫৩টি গাছ রয়েছে। এই বাগান করতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। আমি বাগান থেকে বেদানা বিক্রি করে সব খরচ বাদে লাখ টাকা লাভ করার আশা করছি। যদি এবার বাগানের বেদানা থেকে লাভের পরিমাণ বেশি পাই, তাহলে আগামী বছর বাগানটি আরও সম্প্রসারিত করবো।
হারুন আরও বলেন, বেদানার চাষ অত্যন্ত লাভজনক। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় বাজারজাত করাও খুব সহজ। যদি যত্নসহকারে বেদানা চাষ করা হয়, তাহলে একজন চাষি অনেক লাভবান হতে পারবেন। যখন গাছে বেদানা ঝুলে থাকে, তখন দেখতেও খুব সুন্দর লাগে। কোনো জায়গা অযথা ফেলে না রেখে একটু যত্নসহকারে এই ধরনের বেশি লাভজনক ফলের চাষ করলে খুব সহজেই লাভের মুখ দেখা সম্ভব। প্রতিদিনই বিভিন্ন গ্রাম ও দূরদূরান্ত এলাকা থেকে আগ্রহী মানুষ আমার এই বাগান দেখতে আসছেন আর অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, বেলে দোআঁশ মাটি বা পলিমাটি যেখানে মাটির গভীরতা বেশি, সেখানে সবচেয়ে ভালো চাষ হয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকলে ওই জায়গায় ডালিম চাষ করা যায় না। শাখা কলম ও গুটি কলমের মাধ্যমে মূলত ডালিম গাছের বংশ বিস্তার করা যায়। বাংলাদেশে যেসব উন্নত জাতের ডালিম চাষ করা হয় এর মধ্যে পেপার শেল, মাসকেড রেড স্প্যানিশ রুবি উল্লেখযোগ্য। এদের শাঁস সাধারণত গোলাপী হয়ে থাকে। মৌসুমে প্রতি গাছে ২০০ থেকে ৫০০টি ফল পাওয়া যায়। পাকা ফল বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, বেদানা চাষি হারুনকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আগ্রহী কৃষকদের মাধ্যমে ৬ বিঘা জমিতে ডালিম/আনার/বেদানার চাষ করা হয়েছে। আমি আশাবাদি বর্তমানে বাজারে বেদানার দাম ভালো থাকায় চাষিরা অনেক লাভবান হবেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়তই আগ্রহী কৃষকদের এই ধরনের লাভজনক ফল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। আগ্রহীরা আমাদের কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে এই ধরনের ফলের বাগান তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।