জুমবাংলা ডেস্ক : বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশিক্ষকসুলভ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ, মানসিক হেনস্থা, অহেতুক হুমকি দেয়া এবং অযাচিত স্বেচ্ছাচারিতায় অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকারের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে রোববার (৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ ও স্মারকলিপি জমা দেন তারা।
তাদের অভিযোগগুলো হলো- ‘পরীক্ষা কমিটিতে আছি এবার, ভাইভা পার হবি কীভাবে দেখে নিবো’সহ নানাভাবে হুমকি দেয়া; ‘এই কোর্স তো আমার হাতে, কীভাবে পাস করিস দেখে নিবো’, ‘জীবনে কোনোদিন চাকরি পাবি না’সহ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেবার মতো বিভিন্ন কটূক্তি করা; রি-অ্যাডমিশনের সবার সঙ্গে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা; পছন্দের কিছু শিক্ষার্থীকে অনৈতিকভাবে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়া; ক্লাস নেবার অযোগ্যতা, শুধু স্লাইডের রিডিং পড়ে চলে যাওয়া; পড়া ধরার সময় স্লাইডের সাথে লাইন বাই লাইন মিলানো; অভিভাবক এর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ; মডারেশনের পর পছন্দের কিছু শিক্ষার্থীর কাছে প্রশ্ন ফাঁস করা; ঈদের সময় অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া; চতুর্থবর্ষের প্রজেক্ট পেপারে সই না দেয়া; ক্লাসে অযথা কান ধরে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা।
এছাড়া, ক্লাসে পড়া ধরার পর পৃষ্ঠা নাম্বার জিজ্ঞেস করা, পৃষ্ঠা নাম্বার না বলতে পারলে ক্লাস থেকে বের করে দিয়ে দুই দিনের অ্যাটেনডেন্স কেটে দেয়া; কারো প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ তার এবং পুরো ব্যাচের পরীক্ষার খাতার উপর প্রতিফলিত করা; ক্লাসে প্রশ্ন করার সুযোগ না দেয়া, প্রশ্ন করলে নানাভাবে হেনস্থা করা; ল্যাবে কিছুই না শেখানো, অযথা চিল্লাচিল্লি করা ও ভয়ভীতি দেখানো; ভাইভাতে বৈষম্য ও হেনস্থা করা; আত্মসম্মানে আঘাত লাগে এমন প্রশ্ন করা; নির্দিষ্ট বই এর বাইরে উত্তর লিখলে উত্তর সঠিক হওয়া স্বত্ত্বেও তা ভুল বলে কেটে দেওয়া; ল্যাবে কিছু না শিখিয়ে ‘মাই ল্যাব, মাই রুল’ বলে শিক্ষার্থীদের উপর স্বেচ্ছাচারিতা চালানো এবং প্রশ্ন করতে দাঁড়ালে প্রশ্ন না শুনেই ‘সেমিনার লাইব্রেরীতে বই আছে, দেখে নিস’ বলে তাচ্ছিল্য করে বসিয়ে দেয়া।
অবস্থান কর্মসূচিতে বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমরা আজ এখানে উপস্তিত হয়েছি একজন স্বৈরাচার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যিনি শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের নাম। তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা কোনো মতামত দিতে গেলে নানা ভয় দেখিয়ে তার পরিবার নিয়ে কথা বলে। তার নিয়োগ নিয়েও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে, কারণ তিনি অনার্সে সেকেন্ড ক্লাস পেয়েছিলেন। অনার্সে সেকেন্ড ক্লাস পেয়ে তিনি কিভাবে শিক্ষক হয়, সেটাও খতিয়ে দেখার বিষয়। তিনি শিক্ষক হওয়ার পরও তার শিক্ষক সুলভ আচরণ করতে পারেনি। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিবো। যাতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘একই কোর্সে সবার রেজাল্ট খারাপ কেন?’, ‘থিওরি দিয়ে ল্যাব নয়, হাতে কলমে ল্যাব হয়’, ‘শিক্ষক কেন গ্রুপিংয়ের ইন্ধনদাতা?’, ‘পরীক্ষার খাতায় দুর্নীতি কেন’, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ খাতায় কেন’, ‘তুই কি পাশ করে বের হতে পারবি?: বানিতে স্যার’, ‘কিছু শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত সুবিধা কেন?’, ‘ইদের দিন সিটি কেন?’, ‘তোদেরকে দেখে নিবো: বানীতে স্যার’, ‘তুই কি এখানে আসার যোগ্য: বানীতে স্যার’, ‘রি-এডমিশনের সাথে তুচ্ছতাচ্ছিল্য কেন’ সহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। উৎস: চ্যানেল২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।