হাসান তনা, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী): নিচ দিয়ে বহমান যমুনেশ্বরী নদী। উপরে নির্মিত ‘অ্যাকুয়েডাক্ট’। সেখানে বহমান সেচ খালের স্বচ্ছ পানির ধারা। চারদিকে সবুজের সমারোহ। রয়েছে হাতের কাছে চা বাগানও। দৃষ্টিনন্দন এই স্থানের কল্যাণে পর্যটন আকর্ষণের নতুন সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জবাসীর স্বপ্নে।
উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নে অবস্থিত স্থানটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে শত শত দর্শনার্থী। তাদের বসার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এখানে নদীতে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দশর্ণাথীদের মন কেড়ে নেয় সহজেই। সম্প্রতি নদীর বুকে জেগে ওঠা ২৩ একর চর বাড়তি আকর্শন যোগ করেছে স্থানটিতে। প্রতি বছর এখানে বসা মেলায় ভিড় করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজারো মানুষ।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অ্যাকুয়েডাক্টটির পাশে স্টিলব্রিজের স্থলে যমুনেশ্বরী নদীর উপর নির্মাণ করা হচ্ছে ১৯০ মিটার একটি গার্ডার ব্রীজ। চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। অ্যাকুয়েডাক্টটি রক্ষার জন্য উত্তর ও দক্ষিণ পাশে রয়েছে দুটি বাঁধ। বাঁধের উপর লাগানো হয়েছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির ফুল ও কাঠের গাছ।
গাছের সারি, পাখিদের কলকাকলী, নদীর এঁকেবেঁকে বয়ে চলা এবং অ্যাকুয়েডাক্টটির সন্নিকটে একটি বহুতল বিশিষ্ট উচ্চবিদ্যালয় দেখে মুগ্ধ হবে যে কেউ। অ্যাকুয়েডাক্টটের দু’পাশে দাঁড়ালে দেখা যাবে সম্প্রতি খনন করা নদীর স্বচ্ছ পানির স্রোত ধারা আর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সোনালী ফসলের মাঠ। সেখানে আপন মনে কাজ করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। কখনও কখনও তারা গেয়ে উঠছেন ভাওয়াইয়া গান। নদীর পশ্চিম ও পূর্ব দিকে তাকালে দেখা যাবে জেলেদের মাছ আহরণের দৃশ্য আর সন্ধ্যা নেমে আসলেই শোনা যায় শেয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক। পাশে রয়েছে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প। যা আশি গ্রাম নামে পরিচিত। দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে সিনহা গ্রুপের একটি বিশাল চা বাগান। এসব মনকারা দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসছে ভ্রমণপ্রেমীরা। ফলে মানুষের পদচারণায় সবসময় মুখর হয়ে থাকছে স্থানটি।
সৈয়দপুর উপজেলার খিয়ার জুম্মাপাড়া থেকে ফুচকা বিক্রি করতে আসা আলমগীর হোসেন জানান, ‘ফুচকা, চটপটি ও বার্গাারসহ কয়েক প্রকার খাবার এখানে নিয়ে আসি। বেড়াতে আসা মানুষের কাছে এসব খাবার বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার টাকা আয় হয় আমার।’
ঘুরতে আসা দুই বন্ধু মনির হোসেন ও সুর্য সেন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জে এতো সুন্দর একটি জায়গা রয়েছে তা আগে আমরা জানতাম না। মনমুগ্ধকর পরিবেশ, গাছে গাছে পাখির কলোরব, নির্মল বাতাস আর অ্যাকুয়েডাক্টের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানি দেখতে খুবই ভালো লাগে। স্থানটি সত্যিই অসাধারণ। এখানে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিক করতে আসা মন্দ হবে না।’
তারা এখানে একটি সৌচাগার স্থাপন করার দাবি জানান।
ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে খুব শিগগিরই একটি সৌচাগার স্থাপন করা হবে আশ্বাস দিয়েছেন বাহাগিলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এখানে বসার চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে অ্যাকুয়েডাক্টটিকে ঘিরে একটি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।