জুমবাংলা ডেস্ক : হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মির্জা গালিব বলেছেন, নৈতিকতার সবচেয়ে বড় উৎস হলো ধর্ম। পশ্চিমারা দর্শন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ধর্ম থেকে দূরে সরে গিয়েছে। আমরা তাদেরকে অনুসরণ করতে গিয়ে তাদের মতোও হতে পারিনি, আবার আমরা নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়েছি। একজন ভালো ছাত্রকে একজন ভালো শিক্ষকের সাথে বটতলায় বসালেও সেখানে শিক্ষা হবে। মানুষকে তার নৈতিকতার বিষয় থেকে কখনই দূরে সরানো যাবে না।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ইনডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি) কর্তৃক আয়োজিত এক সেমিনারের আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা গালিব বলেন, ‘নিজের মস্তিষ্ককে কোনো ছোট স্বার্থের জন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়া যাবে না। আমাদের শিক্ষায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। আমাদের ছাত্র এবং শিক্ষকের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক এজেন্ডা হওয়া উচিত শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিতে কাজ করা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো-আমরা দীর্ঘমেয়াদি বড় জাতীয় সমস্যা সমাধান না করে স্বল্পমেয়াদি ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে পরে থাকি।
উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা গালিব আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বে সবকিছুই অনেক চ্যালেঞ্জিং, টেকনোলজি দ্রুত পরিবর্তনশীল, গ্লোবালি প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। যেসকল দেশ সায়েন্স ও টেকনোলজিতে এগিয়ে তারাই অর্থনৈতিকভাবে ততো প্রসারিত। আমাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গবেষক তৈরি করতে হবে সাথে সাথে টেকনোলজিও উন্নত করতে হবে। শিক্ষাখাতে বাজেটের বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে এবং ন্যূনতম জিডিপি’র ৫ শতাংশ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষায় ফান্ডিং না বাড়াতে পারলে উন্নত বিশ্বের সাথে আমরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়বো।
সেমিনারে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, বিগত সরকারের আমলে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হতো না। যেই কারণে ইসলাম শিক্ষা বিভাগে যে শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়, সে কোরআন পড়তেও জানত না। এখন সময় এসেছে দলমত-নির্বিশেষে সত্যিকারের মেধাবীকে মূল্যায়ন করার। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দল মতের ঊর্ধ্বে মেধাবীদের মূল্যায়ন করতে হবে। এতো বছর বিজ্ঞান প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আড়ালে লুটপাট হয়েছে একারনে আমাদের নৈতিক মানদণ্ডে বলিয়ান হতে হবে, এর শিক্ষা ইসলাম আমাদেরকে দিয়েছে।
আইআরডিসির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, আমরা এটি প্রতিষ্ঠা করেছি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কর্ম বৃদ্ধি করতে পারি। একটা জাতির উন্নয়নের জন্য গবেষণা আবশ্যক, আমার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে চাই। প্রত্যেক শিক্ষার্থী এখানে গবেষণা কর্ম করতে পারবে। সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিলাল হোসাইনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ সালেহ আহম্মদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েক।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় বক্তারা দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি গবেষণাকেন্দ্রিক ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়নে কার্যকর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। সেমিনার শেষে মূল বক্তা শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।