জুমবাংলা ডেস্ক: লকডাউনে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মী এবং অন্য যাদের জরুরি প্রয়োজনে বিমান ভ্রমণ করতে হবে তাদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হচ্ছে, তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এমনটিই জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। খবর বিবিসি বাংলার।
বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরে গমনেচ্ছু যেসব কর্মী আটকা পড়েছেন তাদের জন্য আগামীকাল ১৭ই এপ্রিল থেকে বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হবে।
এই পাঁচটি দেশ ছাড়া অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতে চান তারাও বিশেষ ফ্লাইটে যেতে পারবেন।
পাঁচটি দেশ ছাড়া অন্য দেশে যেভাবে যাওয়া যাবে
লকডাউন চলাকালে উল্লিখিত ৫টি দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে যেতে ইচ্ছুক, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সাপেক্ষে ট্রানজিট-প্যাসেঞ্জার হিসেবে বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন।
অর্থাৎ কেউ যদি যুক্তরাজ্যে যেতে চান তাহলে তাকে এই পাঁচটি দেশের একটিতে ট্রানজিট নিয়ে যেতে হবে।
বিশেষ ফ্লাইটে যেসব শর্ত মানতে হবে?
১. সরকার বলছে এই ৫টি দেশে গমনেচ্ছু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স রয়েছে, তাদেরকে বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
২. এসব দেশের ক্ষেত্রে যাদের ভিজিট ভিসা আছে কিন্তু বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স নেই, তারা বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার পাবেন না।
৩. ভিজিট ভিসা নিয়ে যেসব বাংলাদেশি কাজের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন, তারা বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন।
৪. এই ৫টি দেশে বা ট্রানজিট যাত্রীরা এয়ারপোর্টে আসার পথে পাসপোর্ট/ভ্যালিড ভিসা/বিমানের টিকিট/বিএমইটি কার্ড অথবা নিরাপত্তা এজেন্সি কর্তৃক ইস্যু করা পাস সঙ্গে রাখবেন।
৫. যারা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম হতে ভ্রমণ করার জন্য টিকেট ক্রয় করেছেন, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কানেকটিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকায় আনা যাবে।
৬. বিগত তিন দিন ধরে যেসব যাত্রী টিকেট কেনা সত্ত্বেও লকডাউনের কারণে বিদেশ যেতে পারেননি, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা সংশ্লিষ্ট দেশসমুহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের অতিরিক্ত বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করার ব্যবস্থা করা হবে।
করোনাভাইরাস লকডাউনে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশ সরকার অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বন্ধ রাখায় আটকে পড়েছেন অনেক প্রবাসী শ্রমিক।
যারা বাংলাদেশে ফেরত আসবেন তাদের কী করতে হবে?
১. প্রবাসী বাংলাদেশিরা জরুরি প্রয়োজনে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের শর্তে দেশে আসতে পারবেন।
২. প্রত্যেক যাত্রীকে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন করতে হবে।
৩. বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো দেশে ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসী কর্মীদের তালিকা প্রস্তুত করবে।
৪. বিদেশ থেকে ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ দিয়াবাড়ি, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে।
৫. পাঁচটি দেশ থেকে যেসব যাত্রী দেশে আসবেন, তারা বোর্ডিং এর পূর্বেই কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্দিষ্ট হোটেলে বুকিং নিশ্চিত করবেন।
এছাড়া বৈঠকে কাতার ও ওমানে ক্রমহ্রাসমান করোনা সংক্রমণের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিষিদ্ধ দেশসমুহের তালিকা থেকে এই দেশ দু’টিকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
সেখানে সিদ্ধান্ত হয় প্রবাসী কর্মীদের গন্তব্য দেশে পাঠানোর জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ বাংলাদেশি অন্যান্য এয়ারলাইন্স এবং সংশ্লিষ্ট দেশসমুহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারসহ অন্যান্য ক্যারিয়ার বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।