জুমবাংলা ডেস্ক : ব্যাংকখাত থেকে ঋণ নেওয়ায় নতুন রেকর্ড করেছে সরকার। চলতি অর্থবছরের সাড়ে ৫ মাস না যেতেই পুরো অর্থবছরের ঋণ নিয়ে ফেলেছে সরকার। পুরো ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের মাত্র ৫ মাসেই সরকার দেশের ব্যাংকখাত থেকে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি ঋণ, সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও রাজস্ব আদায়ের গতি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হওয়ায় সরকার ব্যয় মেটাতে ব্যাংকমুখী হয়েছে। সরকারের ঋণের চাপে বেসরকারি খাত যেন অর্থ সংকটে না পড়ে সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে ব্যাংকখাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসেই সরকার ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার পুরোটা ঋণই নিয়েছে। যারমধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেই সরকার ঋণ নিয়েছে ৩৭ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এত দ্রুতগতিতে সরকারের ঋণ নেয়ার কারণ হিসেবে, অভ্যন্তরীণ ঋণের আরেক উৎস সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ভাটা, রাজস্ব আদায়ে তেমন কোনো প্রবৃদ্ধি না থাকার বিপরীতে সরকারের উন্নয়ন এবং অনুন্নয়ন ব্যয়ের চাপকে তুলে ধরছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাজেট বাস্তাবায়নে সরকারের ওপর একটা চাপ পড়েছে। শুরু থেকে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে, এবং সেটা করতে গিয়ে টোটাল যে ঋণগ্রহণটা হচ্ছে সেটা অনেক বেশি। সঞ্চয়পত্রে যেটুকু কমেছে তার চেয়ে বেশি। এর কারণ হচ্ছে রাজস্বে ব্যর্থতা। বিদেশি যে ধরনের ঋণ রয়েছে সেটা ব্যবহারে যে ধরনের গতিশীলতা প্রয়োজন। সরকার সেটা পারেনি।
ব্যাংক খাত থেকে সরকার যখন কাঙ্ক্ষিত হারের চেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছে, তখন দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নানা কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতি মন্থর হয়ে পড়ায় তাদের ব্যাংকঋণের চাহিদাও কমেছে।
এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাতলুব আহমেদ বলেন, কোনো ইন্ডাস্ট্রি যদি ব্যাংকে টাকা না পায়, এক্ষেত্রে সে যাতে কথা বলতে পারে সেটার ব্যবস্থা করা উচিত।
ব্যাংকখাত থেকে সরকারের মোট ঋণ ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ঋণ ১ লাখ ১১ হাজার ৪শ’ কোটি আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ঋণ প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।