জুমবাংলা ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের পরিবেশ গুমট হয়ে আছে। চিৎকার করে কাঁদছে শিশু মাহিমা। মা মা বলে চিৎকার শুনে কেউ এগিয়ে আসছে না। তাকে কোলে নিয়ে নার্সরাও কাঁদছে। কি করবে বুঝতে পারছে না কেউ। কি করে বোঝাবে ওকে, মা আর আসবে না। অথচ মাত্র কয়েকঘণ্টা আগে ট্রেনে মায়ের কোলে ঘুমিয়ে ছিলো মাহিমা। সেখানেই চিরদিনের জন্য মাকে হারিয়ে ফেলে সে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে কসবার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৭৬ জন।
শিশুটির বাবা মাইনুদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, পরশু হজরত শাহজালাল (রা.) ও হজরত শাহপরানের (রা.) মাজার জিয়ারত করতে তার স্ত্রী কাকলি আক্তার, মেয়ে মহিমা আক্তার, মামা জাহাঙ্গীর মাল, মামি আমাতন বেগম ও মামাতো বোন মরিয়ম সিলেটে যান। সোমবার সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হন তারা। চাঁদপুর থেকে ট্রলারে করে তাদের শরীয়তপুরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী, মামি ও মামাতো বোন মারা যান। আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কাকলির বড় ভাই ফরিদ মুন্সী ও তিনি লাশ শনাক্ত করেন।
তার মামা জাহাঙ্গীর এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও মাইনুদ্দিন জানান।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, ‘সকালে আহত রাহিমা আক্তার নামের এক বৃদ্ধা ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। রাহিমা চাঁদপুরের সাতিরাশির বাসিন্দা। তখন তিনি এই শিশুর নাম মহিমা বলে জানান। তার বাবার নাম মঈন উদ্দিন এবং চাঁদপুরের কাকলী তিতাসের বাসিন্দা বলে জানালে রেজিস্টার্ড বইয়ে সেটিই উল্লেখ করা হয়।’
শওকত হোসেন আরও বলেন, ‘শিশুটির কপালের বাম পাশ থেকে মাথার পেছন অংশ পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। কপালে সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে আছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।