জুমবাংলা ডেস্ক: ধুলো, শব্দ আর ধ্বংসলীলা। পাথরখেকোদের ক্ষত-বিক্ষত আঁচড়। এসবের কারণে প্রায় বিলীন হতে বসেছিল নদী, পাহাড় ও চা-পাতাবেষ্টিত পর্যটন ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র শ্রীপুর। যেখানে এক সময় ঢাকাই সিনেমার অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের চিত্রধারণ হতো এই শ্রীপুরে। সেই পর্যটনকেন্দ্রটির সোনালি দিনগুলো স্মৃতির আড়ালে হারিয়ে যেতে বসেছিল। অবশেষে ধীরে ধীরে স্বরূপে ফিরছে শ্রীপুর।
পরিবেশ, প্রকৃতিপ্রেমী ও পর্যটকদের দাবি, গত ৫-৭ বছর পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখার কারণে শ্রীপুর পর্যটনকেন্দ্রটি তার অতীত ফিরে পেয়েছে। তবে পাথরখেকোদের থাবা, স্থানীয় প্রশাসনের চরম অবহেলা ও উদাসীনতায় শ্রীপুরের ফিরে আসা শ্রী পুনরায় বিলীন হতে শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০০০ সালের শুরুর দিকে উপজেলার শ্রীপুর পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাথর আহরণ শুরু করে একটি পাথরখেকো মহল। সরকারও রাজস্ব আদায়ের জন্য শ্রীপুর, রাংপানি নদীটি ইজারা দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় শ্রীপুর পাথর কোয়ারির জন্ম হলে কিছুদিনের মধ্যে শ্রীপুর পর্যটন স্পটটি বিলীন হয়ে যায়।
পর্যটক বিমুখ করতে একটি ১০ হতে ১২ সদস্যের পাথরখেকো চক্র গত সেপ্টেম্বর মাস হতে বর্তমান পর্যন্ত শ্রীপুর কোয়ারির জিরো লাইন হতে পাথর আহরণ করছে।
ইতিমধ্যে চক্রটি প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের পাথর লুট করেছে। সিলেট শহরের বাসিন্দা রাজিব রায় বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে আসেন শ্রীপুরে। তিনি বলেন, এক সময় আমরা বাংলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শ্রীপুরের দৃশ্য দেখেছি। এখানে বেড়াতে এসে দেখলাম প্রকৃতি আপন মহিমায় শ্রীপুরকে সাজিয়ে রেখেছে। সত্য কথা হলো শ্রীপুর ঘুরতে না আসলে রূপের মহিমাটি কখনো দেখা হতো না। এ পর্যটন কেন্দ্রটিকে সংরক্ষণ করা হলে অসাধারণ পর্যটন স্পট হয়ে উঠবে। ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, শ্রীপুর একসময় ছিল উপজেলার জনবহুল স্থানের একটি। কালের বিবর্তনে পরিবর্তন আসে।
সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল হাদি বলেন, শ্রীপুরের বর্তমান যে চিত্র সরজমিন দেখা মিলেছে তা অভাবনীয়। শ্রীপুরের এখন যে রূপটি ফুটে উঠেছে তাকে ধরে রাখতে হবে। প্রকৃতিকে ধরে না রাখতে পারলে অচিরেই পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হব আমরা। উত্তরপূর্ব সিলেটের ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসেবে জৈন্তাপুর লাল তালিকায় চিহ্নিত হয়েছে। সেজন্য প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ না করে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রকৃতিবান্ধব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।
৫৪০ বছরের পুরনো জানালাবিহীন মসজিদ: শীতে উষ্ণ, গ্রীষ্মে শীতল!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।