দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের পানীয় ও খাবারে মিশে যাচ্ছে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক। তারপর সেগুলো জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের শরীরে। চারদিকে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়ি। এসব প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো পানি ও খাবারে মিশে মানবস্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। অন্ত্রের প্রদাহ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতাসহ শরীরের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে মাইক্রোপ্লাস্টিক। তাই পুরো বিশ্ব এখন এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।
৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট প্লাস্টিকের কণাকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এর চেয়ে ছোট কণাগুলো ন্যানো-মাইক্রোপ্লাস্টিক। তবে পানি থেকে এই ন্যানো/মাইক্রোপ্লাস্টিক সরানোর সহজ ও কার্যকর কিছু ঘরোয়া উপায় গবেষকেরা সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন।
চীনের গুয়াংজু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জিনান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সফট ওয়াটার (পর্যাপ্ত মিনারেল উপস্থিত থাকে না) ও হার্ড ওয়াটার (সুপেয় পানি/ পর্যাপ্ত মিনারেলসমৃদ্ধ) নিয়ে একটি পরীক্ষা করেছেন। প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে একটি গবেষণাপত্র তৈরি করে এসব পদ্ধতি জানান তাঁরা।
ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা লিখেছেন, ‘ট্যাপের পানিতে থাকা ন্যানো-মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রতিনিয়ত আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।’ তাঁদের মতে কিছু ক্ষেত্রে পানির ধরনের ওপর ভিত্তি করে, ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ন্যানো/মাইক্রোপ্লাস্টিক সহজ দুটো ঘরোয়া পদ্ধতিতেই কমানো যায়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, অধিকাংশ মানুষ চাইলে নিজের রান্নাঘরেই পানিতে থাকা প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাগুলো সরিয়ে ফেলতে পারবেন।
ফোটানো ও ছাঁকা
সবচেয়ে সহজ ও চিরায়ত এই প্রক্রিয়া। ফুটিয়েই গৃহস্থালির ট্যাপের পানি পরিশোধন করা যায়। তাপ দিলে ন্যানো/মাইক্রোপ্লাস্টিকের একটি ঘন কনসেনট্রেশন তৈরি হয়, যাকে লাইমস্কেল বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট বলা হয়। এই ঘন অংশ নিচে তলানিরূপে জমা হয়। তারপর ছেঁকে নিলে পাওয়া যায় বিশুদ্ধ পানি। ‘এই প্রক্রিয়ায় পানি পরিশোধন করে নিলে শরীরে ন্যানো/মাইক্রোপ্লাস্টিক কম প্রবেশ করে’, জানায় গবেষক দলটি।
ফ্রিজিং ও ডেকান্টেশন প্রক্রিয়া
মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করার আরেকটি সহজ পদ্ধতি হলো ফ্রিজিং ও ডেকান্টেশন প্রক্রিয়া। এ পদ্ধতিতে পানিকে প্রথমে কাচের পাত্রে নিয়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হয়। ফ্রিজিংয়ের ফলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের বেশির ভাগ কণা পানির নিচে ও ওপরে জমা হয়। ওপরের কিছু পানি ও নিচের স্তরের পানিতে জমে থাকা কণাগুলো ফেলে দিয়ে মাঝের অংশের পানি পানের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।