জুমবাংলা ডেস্ক : নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর ইন্দিরা রোডের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় সেখান থেকে বিদেশি অস্ত্র, ম্যাগজিন, গুলিসহ বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আজ রবিবার বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর ইন্দিরা রোডের বিলাসবহুল একটি ভবনে পাপিয়া-সুমন দম্পতির দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ২০টি গুলিসহ দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, পাঁচ বোতল দামি মদ, নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, যার বৈধ উৎস তারা দেখাতে পারেননি, তিনটি পাসপোর্ট, চেক বই, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, আসামিদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা না থাকা সত্ত্বেও খুব অল্প সময়ে তারা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাদের ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট, একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি, নরসিংদীর বাগতি এলাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লট, এফডিসি একালাকায় কার এক্সচেঞ্জ নামে অংশীদারিত্বের অপর একটি গাড়ির ব্যবসা, যেখানে তাদের এক কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে বলে তারা জানান, নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সল্যিউশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে বলেও তারা জানান।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে তাদের অ্যাকাউন্টে প্রচুর পরিমাণে অর্থ গচ্ছিত আছে বলেও তারা প্রাথমিকভাবে র্যাবকে জানিয়েছেন।
পালিয়ে দেশত্যাগ করার সময় গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শামিমা নূর পাপিয়া (২৮) এবং তার স্বামী ও অপরাধের সহযোগী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯), ও শেখ তায়্যিবাকে (২২) গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের কারবার, মাদককারবার, চাঁদাবাজিসহ নারীঘটিত অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা হুণ্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল। তিনি বলেন, অনুসন্ধানে র্যাব জানতে পারে, গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপনে দেশের বাইরে পাচার করে আসছে। টাকা পাচারের পর তারা গোপনে দেশত্যাগের জন্য বিমানবন্দরে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাব-১-এর একটি আভিযানিক দল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার টাকা মূল্যের জালনোট, ৬০০ ভারতীয় রুপি ৩১০, ৪২০ শ্রীলংকান মুদ্রা, ১১ হাজার ইউএস ডলার এবং সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানান, অবৈধভাবে অর্থপাচার ও জাল টাকা প্রস্তুতকারী এ গ্রুপের প্রধান শামিমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন তার সহযোগী। এ ছাড়া সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।