জুমবাংলা ডেস্ক: বাণিজ্যিকভাবে কাসুন্দি তৈরি ও বাজারজাত করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন পাবনার বেড়া পৌরসভার ও সাঁথিয়া উপজেলার অন্তত ২০০ এর বেশি নারী। শুধু বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে কাসুন্দি তৈরি করে একেকজন নারী ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। কাঁচা আম, আমড়া, কামরাঙা, চালতার মত টকজাতীয় ফলের স্বাদ বহু গুণ বাড়িয়ে দেয় কাসুন্দি।
জানা গেছে, কাসুন্দি মুখরোচক মশলা জাতীয় খাবার। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে এই কাসুন্দি। প্রতিকেজি কাসুন্দি বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। কাসুন্দি মৌসুমে সব বাদ দিয়ে প্রতিজনের আয় হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেড়া পৌর এলাকার মৈত্রবাঁধা ও শেখপাড়া মহল্লার নারীরা বাণিজ্যিকভিত্তিতে তৈরি করছেন কাসুন্দি। সাঁথিয়া উপজেলার গৌরীগ্রাম ঘোনাপাড়া, ভদ্রখোলা, ইকরজনা গ্রামের বেশকিছু হিন্দু পরিবার কাসুন্দি তৈরির সঙ্গে জড়িত আছেন। সবমিলিয়ে প্রায় ২০০ নারী কাসুন্দি তৈরি ও বিক্রি করে তাদের সংসারে আনছে সচ্ছলতা। কাসুন্দি তৈরির পর পাইকারি বিক্রির কাজে বাড়িগুলোর নারীরাই মূলত জড়িত। তবে বাড়ির পুরুষেরা বাজার থেকে কাসুন্দি তৈরির উপকরণ কিনতে সহায়তা করে থাকেন।
কাসুন্দি তৈরির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নারী জানান, প্রায় দুই যুগ আগে বেড়া পৌর এলাকার মৈত্রবাঁধার গঙ্গারাণী নামের এক নারী এই এলাকায় কাসুন্দি তৈরি করে বিক্রি শুরু করেন। বয়সের ভারে এখন আর তিনি কাসুন্দি তৈরি করেন না। তবে তার কাছ থেকেই জানা যায় কাসুন্দি তৈরির কলাকৌশল। গৌরীগ্রাম ঘোনাপাড়া গ্রামের লক্ষী রানী বলেন, আগে মেলা (প্রচুর) কাসুন্দি বানাইতাম এখন কম বানাই। প্রতিবেশিদের অনুরোধে বানাই। এ কাজে পরিশ্রমও আছে লাভও হয় ভালো।
ফেরি করে বিভিন্ন গ্রামে কাসুন্দি বিক্রি করেন মৈত্রবাঁধা মহল্লার নুরী বেগম বলেন, ‘আমাগরে গিরামের কাসুনের (কাসুন্দি) সুনাম দূর-দূরান্তে ছড়ায়া গ্যাছে। এই কাসুন বেচার জন্নে একদিকে পাবনা, আরেক দিকে সেই শাহাজাদপুরের (সিরাজগঞ্জ) নানা জায়গায় যাই।’
মৈত্রবাঁধা মহিলা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রায় জানান, কাসুন্দি তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত নারীদের প্রত্যেকে দরিদ্র। সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থাকা কাসুন্দি মৌসুমে তারা যা আয় করেন তাতে তাদের সংসারে সচ্ছলতার পাশপাশি অভাব অনেকটা দূর হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।