পাবনা প্রতিনিধি: মোঃ সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করায় তার নিজ জেলা পাবনায় দোয়া মাহফিল, মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বড় পর্দায় রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান দেখানো হয়। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির দীর্ঘায়ু ও সফলতা কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া শেষে সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পরে একটি আনন্দ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজসহ অনেকে।
নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে পাবনাবাসীর প্রত্যাশা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে ভূমিকা রাখবেন তিনি। পাশাপাশি তার নিজ জেলা পাবনার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবেন।
নাট্য ব্যক্তিত্ব আব্দুল হান্নান শেলী বলেন, নতুন রাষ্ট্রপতি পাবনার কৃতি সন্তান হলেও এখন তিনি সারাদেশের। তারপরও তার কাছে পাবনাবাসীর অনেক প্রত্যাশা। পাবনার নতুন রেললাইনকে ঢাকার সাথে সংযুক্ত করে দু’টি ট্রেন চালুর দাবি জানাই। সেইসাথে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, তিনি যেখানে পড়াশোনা করেছেন সেই সরকারি এডওয়ার্ড কলেজকে পূর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও আর এম একাডেমীকে সরকারিকরণ করার দাবি থাকবে।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় ভূষণ রায় বলেন, আমাদের প্রত্যাশা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে, তিনি যে শোষনমুক্ত সমাজ ব্যবস্থার কথা বলে গেছেন, সেই বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে নতুন রাষ্ট্রপতি কাজ করবেন বলে বিশ্বাস করি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ঘিরে নতুন একটা আশার সঞ্চার হয়েছে। আশা করি তার মাধ্যমে আমরা পাবনার উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, পাবনার রাজনীতি অঙ্গনে একজন মহাপুরুষ। তিনি রাজনীতিতে কারো কাছে মাথা নত করেন নাই। কারোরা সাথে আপোষ করেন নাই। আমরা আশা করি নতুন রাষ্ট্রপতির ইমেজ দিয়ে আগামী নির্বাচনে পাবনার ৫টি আসনে আমরা জয়লাভ করবো। প্রধানমন্ত্রী যে সোনার মুকুট তাকে পরিয়ে দিয়েছেন, তার কাছে আশা নিজের জীবন দিয়ে হলেও দেশের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
পাবনা শহরের শিবরামপুরের লক্ষীসাগর এলাকার বাড়িতে ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন মো. সাহাবুদ্দিন। বাবা শরফুদ্দিন আনসারী ছিলেন ব্যবসায়ী, আর মা খায়রুন নেসা ছিলেন গৃহিণী। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে সবার বড় সাহাবুদ্দিন। ব্যক্তিজীবের তিনি এক পুত্র সন্তানের জনক।
১৯৬৬ সালে পাবনা শহরের রাধানগর মজুমদার একাডেমী থেকে মাধ্যমিক পাস করেন সাহাবুদ্দিন। এরপর সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি ও বিএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে এমএসসি এবং পাবনার শহীদ আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলে তিনি পাবনা জেলা কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মনোনীত হন। ওই বছর ১৫ই আগস্টের পর সামরিক আইন বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীকালে তিনি কয়েক বছর সাংবাদিকতা করেছেন দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকায়। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন ভারতে প্রশিক্ষিত এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৮২ সালে বিসিএস পরীক্ষার পরপরই সহকারি জজ হিসেবে শুরু করেন চাকরি জীবন। জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে ২০০৬ সালে অবসর নেন তিনি।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাবনা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় প্রেসক্লাবের কল্যাণ ফান্ডের কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।