Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home পাবলো নেরুদা: বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক (৩য় পর্ব)
    ইতিহাস মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার শিক্ষা শিল্প ও সাহিত্য

    পাবলো নেরুদা: বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক (৩য় পর্ব)

    Yousuf ParvezAugust 11, 2019Updated:June 15, 202510 Mins Read
    Advertisement

    জুমবাংলা ডেস্ক:  বিশ শতকের সর্বাধিক পঠিত কবি চিলির পাবলো নেরুদা (জন্ম ১২ জুলাই ১৯০৪, মৃত্যু ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩)। মাতিলদে উরুটিয়া পাবলো নেরুদার তৃতীয় স্ত্রী, দাপ্তরিকভাবে তাদের দাম্পত্যকাল ১৯৬৬ থেকে নেরুদার মৃত্যু পর্যন্ত। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ জেনারেল অগাস্তো পিনোশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সালভাদর আয়েন্দের সরকারকে উৎখাত করলেন। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে আগুন জ্বলল, চলল অবিরাম গুলিবর্ষণ। নেরুদার প্রিয় বন্ধু প্রিয় প্রেসিডেন্ট আয়েন্দে নিহত হলেন। তাঁকে নিয়ে মাতিলদে উরুটিয়ার স্মৃতিগ্রন্থ মাই লাইফ উইথ পাবলো নেরুদা। দু’জনের জেনেভায় নির্বাসিত জীবন কাহিনী অনূদিত হলো। আজ থাকছে ৩য় কিস্তি। 

    আমরা কথা বলার মতো একটি ছোট্ট প্রান্ত খুঁজছি। কী ঘটেছে শোনার জন্য আমি অস্থির হয়ে উঠেছি। আমি দেখতে পাচ্ছি পাবলো বিষন্ন, কোনো একটা কিছু তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। সমুদ্রের দিকে তাকাই, আমরা যে ডক ছেড়ে এসেছি সেদিকে তাকাই। আমরা যত দূরে সরে আসছি ডক ততই ছোট হয়ে আসছে। এবার পাবলো নিজে থেকেই আস্তে আস্তে বলতে শুরু করে, এমন একটা গোপন কথা বলবে যা বলতে সমস্যা হচ্ছে।
    পাবলো বলল, ‘আজ আমার জন্য খুব বেদনাদায়ক একটি ঘটনা ঘটেছে। ওরা আমাকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করেছে। সে কারণেই পুলিশ আমাকে ডেকেছিল।’
    ‘বল, তুমি আমাকে সবটা খুলে বল।’
    ‘তাদের সবকিছু আগে থেকেই ঠিক করা ছিল, পুলিশ আমার সঙ্গে বন্ধুসুলভ ব্যবহার করেছে। বলেছে, তারা কেবল আদেশ তামিল করছে। তারা আমাকে বলল, আমি যদি কোনো ঘোষণা দিতে চাই, তাহলে তা বহিষ্কার আদেশের ওপর লিখে দেওয়া হবে।’
    পাবলো একটি ঘোষণাপত্র লিখল। তাতে সে বলল, সারা জীবন ফ্রান্সকে ভালোবেসেছে, এ দেশের সেবা করেছে, এ দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনেছে, সে কোথায় ছিল তাতে কিছু এসে যায় না, ফ্রান্সের ব্যাপারে সে যা করছে তা করতেই থাকবে।
    ‘পুলিশ আমার অটোগ্রাফ চাইল। কী পরিহাস!’
    আমি পাবলোর হাত ধরলাম এবং পরস্পরের দিকে তাকিয়ে রইলাম, বললাম, ‘পাবলো আমার প্রেম, এসব বেশিদিন টিকবে না, ফ্রান্সে তোমার বন্ধুরা আছে, শিগগিরই তারা এসব বাতিল করাতে পারবে। এখন চল আমরা তাদের লিখতে থাকি। কী হয়েছে তাদের জানাই।’

    স্থলভাগ থেকে আমাদের জাহাজ যত দূরে সরে যাচ্ছে, পাবলো আমাদের ছোট কোণটিতে বসে ফ্রান্সকে বিদায় জানাচ্ছে। সে গভীরভাবে ব্যথিত হয়ে পড়েছে।
    ‘দেশটাকে আমি এত ভালোবাসি, কিন্তু এ এক অস্বস্তিকর ভালোবাসা। আমার যা কিছু বেশি পছন্দের সবই ফ্রান্সে আছে। এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের দোকানে এত ঝিনুক, মনে হয় ঝিনুকেরই সমুদ্র, এখানকার বইয়ের দোকানদাররা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, পোষাপাখির দোকানে পৃথিবীর সব দেশের পাখি পাওয়া যায়। এ দেশ হচ্ছে সভ্যতার মডেল। আর এ দেশ থেকেই আমাকে বহিষ্কার করল, যেন আমি তাদের রাষ্ট্রের শত্রু। আমি তো শৈশবে তাদের ভাষা শিখেছি এবং তাদের সাহিত্য পড়েছি।’
    পাবলোর কণ্ঠে ঘৃণার কোনো উচ্চারণ নেই, আছে কেবল বেদনার। জাহাজ নির্দিষ্ট গতিপথে চলছে। আমি বললাম, ‘চল কেবিনে ফিরে যাই।’
    পাবলো বলল, ‘না, আমার যারা কেবিনমেট আমি তাদের মুখোমুখি হতে পারব না, কাল সকালে ঘুম থেকে উঠলে দেখব আমার পাতোজা (নেরুদা মাতিলদেকে এই আদুরে নামেও ডাকতেন। এর মানে হেলেদুলে চলা বড় হাঁস) নেই, তার বদলে অন্যসব মানুষ।’
    আমরা দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভ্রমণ করছি কারণ আমাদের আইনসিদ্ধ বিয়ে হয়নি, চাঁদকে সাক্ষী রেখে আমরা বিয়ে করেছি কিন্তু তা জাহাজের জন্য বৈধ নয়, আমরা সেজন্য এক কেবিনে থাকতে পারছি না। এটা তো ভারি অন্যায়। যাদের সঙ্গে আমাদের কেবিন শেয়ার করতে হচ্ছে, তারা কেমন আমরা ভাবতে থাকি।
    পাবলো বলল, ‘আমার কেবিনে তিনটি বেড। এর অবস্থা তোমারটার চেয়ে খারাপ।’

    আমাদের জীবন ক্রমেই জটিল হয়ে আসছে। আমরা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে প্রায় সমস্বরে বলে উঠি, সারাটা দিন যখন এমন বাজেই কাটল, চল এটাকে ঘটা করে বিদায় দিই, এখন তা উদ্যাপন করব।
    আমরা শ্যাম্পেনের অর্ডার দিই এবং দিনের ওইসব অঘটনের টোস্ট করতে গ্লাস উঁচিয়ে ধরি। ফ্রেঞ্চ কনস্যুলেটে যে দস্যু আমার ওপর সুযোগ নিয়েছে তার টোস্ট করি, যারা দাবি করেছে তারা পাবলোকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করতে চায়নি, তবু করতে বাধ্য হয়েছে আমরা তাদের জন্য টোস্ট করি।
    আমি পাবলোকে বলি, ‘তুমি কি জানো চোর আমাকে রিসিটও দিয়েছে।’
    পাবলো রিসিট দেখতে চাইল। আমি আমার পার্সের ভিতর খামটা খুঁজছিলাম, দেখলাম সেখানে রিসিট নেই। তার মানে একেবারে শেষ মুহূর্তে রিসিট টেনে নিয়ে গেছে। আমরা এক দফা হাসলাম। লোকটা নিশ্চয়ই অত্যন্ত পাকা জোচ্চোর।

    বোতলের শ্যাম্পেন শেষ করার পর আমরা অনেকটা ভালো বোধ করি, আমাদের কেবিন দেখতে যাই। জীবনের কত অবিচার। আগে যাই আমার কেবিন দেখতে। দরজায় টোকা দিই, তারপর ভিতরে ঢুকি। সুন্দর ও দয়ালু হাসির এক বৃদ্ধা আমার দিকে তাকিয়ে সহাস্যে বললেন, ‘আমি আন্তোনিয়া’।
    ‘আমি মাতিলদে’।
    তিনি পাবলোকে চিনে ফেললেন। পুরু স্প্যানিশ উচ্চারণে বললেন, ‘নেরুদা এখানে?’
    তিনি উঠে দাঁড়িয়ে পাবলোকে চুমো খেলেন। স্পেনের গণযুদ্ধের সময় দুই শর বেশি স্প্যানিয়ার্ডকে পালানোর সুযোগ করতে পাবলো ‘উইনিপেক’ নামের যে জাহাজের ব্যবস্থা করেছিল এই বৃদ্ধা ছিলেন তাদের একজন। তিনি পালিয়ে চিলিতে চলে আসেন। এখন তিনি চিলির ভিনা দেল মারেতে বসবাস করেন। মিস্টার ইম্বার্টকে বিয়ে করেছেন।
    আমরা আর একবার অনুধাবন করলাম আমাদের পক্ষে অজ্ঞাতকুলশীল হয়ে ভ্রমণ করা সম্ভব নয়।
    তিনি আমাদের বললেন, ‘আসুন, ভিতরে আসুন, কিন্তু কেবিনটা বড্ড ছোট, আমরা কোনোভাবে সামলে নিতে পারব।’
    পাবলো আমার দিকে কৌতূহলের চোখে তাকায়। আমাদের অন্তরঙ্গতা, আমাদের গোপনীয়তা আমরা সযত্নে পাহারা দিয়েছি, এখন তার সমাপ্তি ঘটেছে। এখন আমাদের ভিন্ন এক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে, এখন জনতার সঙ্গে জীবন।
    এক ধরনের হাসি দিয়ে পাবলো আন্তোনিয়াকে বলল, ‘আমাকে আমার কেবিনে যেতে হবে, তবে পরে এখানে আসব।’ তার পরই পাবলো নিজের কেবিন দেখতে বেরিয়ে গেল, দেখা যাক সেখানে তার কপালে কী আছে।
    আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমি কিছু জিনিস ব্যাগ থেকে খুললাম এবং পাবলোর প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় রইলাম। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সে ফিরে এলো।

    সমুদ্রের ওপর আমাদের এই নতুন বাড়িতে আমরা একটি নিজস্ব কোণ অনুসন্ধান করছি। আমরা একটি আরামদায়ক জায়গাও পেয়ে গেলাম। সেখানে কিছু বই আছে এবং পাবলোর লেখার মতো জায়গাও আছে। পাবলো ঘোষণা করল, ‘সকালে এটাই হবে আমাদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের স্থান।’ আমাদের নতুন বন্ধু আন্তোনিয়ার মিষ্টি সান্নিধ্যে আমরা কয়েকটি দিন বেশ উপভোগ করলাম। তিনি আমাদের কিছুই জিজ্ঞাসা করেননি। আমার মনে হয়েছে তিনি আমাদের দিকে তাকিয়েছেন এবং সবকিছু বুঝে গেছেন। বিকালবেলা অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে তিনি আমাদের বলেছেন, ‘আমি এখন বাইরে বুননের কাজ করব। ডিনারের সময় না হওয়া পর্যন্ত আর আসছি না।’ আমাদের ভালোবাসার জীবনটি রক্ষা করতে তার যে এই মহানুভব অবদান সেজন্য কখনো তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার সুযোগ পাইনি। কারণ আমরা কখনো বিব্রতকর এ বিষয়টি উত্থাপিত হোক তা-ই চাইনি।
    সব মিলিয়ে আমাদের প্রথম সমুদ্র ভ্রমণটি অত্যন্ত আনন্দপ্রদ হয়েছে, সবকিছুই সুন্দরভাবে এগিয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভ্রমণটি বড় তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেছে।
    জাহাজে আমাদের শেষ রাতে জনশূন্য ডেকে বসে থাকি এবং ঢেউয়ের পাঠ নিই, যেমনটি করেছি আমরা প্রতি রাতে, গভীর রাত পর্যন্ত।
    কিন্তু শেষ রাতটিকে নিঃশব্দ যন্ত্রণার চাদর আমাদের ঢেকে রেখেছে। আমরা দ্রুত বন্দরের দিকে এগোচ্ছি, আমি মাটির ঘ্রাণ পেতে শুরু করি। আমার মনে পড়ল সকালে অন্ধকার একটি দরজাপথে আমাকে এগোতে হয়েছে। আমি ভবিষ্যতের কথা ভেবে আতঙ্কিত বোধ করতে থাকি যদিও পাবলো আমার প্রতি অত্যন্ত কোমল, আমার জন্য অনেক তার ভালোবাসা।
    সকালেই আমাদের বিদায় পর্বটি ঘটে গেল। পাবলো নেমে গেল মন্টেভিডিওতে। আগেই সে টেলিগ্রাম পেয়েছে চিলির বেশ কজন পার্লামেন্ট সদস্য উরুগুয়েতে তার প্রতীক্ষায় থাকবে।

    জাহাজ বন্দরে ভিড়ল। পাবলোর সঙ্গে আমার আর কথা হলো না। সংসদ সদস্যরা তাকে ঘিরে রেখেছে, আরও অনেকেই তাকে অভিবাদন জানাতে এসেছে। আমি দেখলাম জনতা হাসছে, আনন্দ করছে, তাকে আলিঙ্গন করছে। তারা তাকে নিয়ে চলে গেল।
    ততক্ষণে আর্জেন্টিনার পুলিশ জাহাজে উঠল, আমি খুব সহজেই চিলির ভিসা পেয়ে গেলাম। আমি জাহাজেই রইলাম, সন্দেহ আমাকে গ্রাস করল। আমি কি চিলিতে বসবাস করতে পারব? এভাবে দেশে ফিরে এসে আমি কি ভুল করেছি?
    এত বছর দূরে থাকার পর এমন করে লুকিয়ে চিলিতে ফিরে আসার পরিকল্পনাটি আমার ভালো লাগেনি। আমার ফেরার ব্যাপারটি কেবল দুজন বন্ধু জানত, ব্লাঙ্কা হাউমার এবং আরমান্দো কারভাজাল। তারা আমার জন্য সান্টিয়াগো এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করবে। তারা এর মধ্যে আমার জন্য বাড়ি ভাড়া করেছে, কিন্তু তা শহরের কোন জায়গায় আমার কোনো ধারণাই নেই।
    আমি আগে আগেই কেবিনে ফিরে আসি, পড়ব এই আশায় সঙ্গে একটি বই নিই, কিন্তু আন্তোনিয়ার তখন কথা বলার মুড।
    তিনি আমার বিষন্নতা বুঝতে পেরেছেন। তিনি আমাকে স্পেনের কথা শোনাচ্ছেন, চিলিতে তার জীবনটা কেমন ছিল তা শোনাচ্ছেন, চিলি তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে কথা বলছেন। আমি তার কথার অর্ধেক কেবল শুনছিলাম; ভাগ্য ভালো তিনি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছেন যাতে আমি একা পাবলোর চিন্তায় ফিরে যেতে পারি।

    পাবলো এখন তাহলে কী করছে? আমার মতো সেও কি ঘুমাতে পারেনি? আমাদের আবেগময় বিদায়বেলার কথা মনে পড়ে। পাবলো খুব সাধারণভাবে আমাকে বলেছে, ‘আমি তোমাকে ছেড়ে যাচ্ছি না। আমি সবসময়ই তোমার সঙ্গে আছি।’
    আর পাবলো সত্যিই আমার সঙ্গে আছে, আমার অনেক গভীরে।
    খুব সকালে আমরা বুয়েনস আইরেস পৌঁছলাম, আমি জাহাজ থেকে নামলাম। আবার কেবল একা আমি এবং আমার কুকুর। যারা কুকুর নিয়ে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য বুয়েন্স আইরেসের মতো নির্বান্ধব শহর আর নেই। কিছু বিষয় আমি বুঝতেই পারি না, আমি তো এমন সব শহর থেকে এসেছি যেখানে কুকুর নিয়ে ইচ্ছামতো ঘোরাফেরা করা যায়। কিন্তু বুয়েন্স আইরেস কুকুরসহ ভ্রমণ করতে আসা কোনো নারীকে চায় না। ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাকে বন্দর থেকে হোটেল ফ্লোরিডায় নিয়ে আসে, আমি এখানে আগেও একবার অনেক দিন ছিলাম। ড্রাইভার বলল, ‘ম্যাডাম, কুকুরসহ কেউ আপনাকে গাড়িতে তুলবে না। কোনো হোটেল আপনাকে রুমও দেবে না।’
    উদ্বিগ্ন অবস্থায় হোটেলের সামনে ক্যাব থেকে বেরিয়ে আসি, এখানে আগে থেকেই আমার রুম রিজার্ভ করা ছিল। কত বছর আগে আমি এখানে ছিলাম, এখন স্টাফদের কেউই আমাকে চিনছে না।
    যখন আমার ছোট্ট মূল্যবান কুকুরের ওপর তাদের নজর পড়ল, বলল, আমাকে রুম দেওয়া যাবে না। আমি বললাম, মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাই।
    আমি তাদের বললাম, ‘আমি এখান থেকে যাচ্ছি না, বহু বছর এ হোটেলই ছিল আমার বাড়ি। গত পাঁচ বছর এখানে ফিরে আসতে পারিনি, কিন্তু মনে হয় এটা আমার বাড়ি।’
    তারা আমাকে একটি অফিসে নিয়ে এলো। ভদ্রলোক আমাকে বসতে বললেন এবং ব্যাখ্যা করলেন আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে কোনো রুমে পোষা জন্তু রাখার সুযোগ নেই।
    আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘কুকুরের প্রতি এত ঘৃণা কেন?’
    ‘কুকুরের শরীরে পোকা থাকে।’
    আমি হেসে উঠে বললাম, ‘সাহেব, আমার কুকুরের শরীর থেকে যদি একটা পোকা বের করে দিতে পারেন, আমার সব টাকা আপনাকে দিয়ে দেব।’

    আমরা শেষ পর্যন্ত একটা সমঝোতায় পৌঁছি। আমি মাত্র দুই রাতের জন্য কুকুর নিয়ে থাকতে পারব। আর কুকুর নিয়ে সকাল ৭টার আগে এবং রাত ৮টার পরে সাইডওয়াল ধরে হাঁটাহাঁটি করতে পারব। তিনি আমাকে আরও সতর্ক করলেন, কোনো ট্যাক্সিওয়ালাই কুকুরসহ আমাকে তুলবে না। শেষ পর্যন্ত আমাকে একটি রুম দিয়ে বললেন, ‘ম্যাডাম, ফাইন কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত। স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কোনো ঝামেলা আমরা চাই না।’
    আমি অন্য এক পৃথিবীতে প্রবেশ করি, আমার পৃথিবী।
    আমি শহরে হেঁটে বেড়াই, বিস্মিত হয়ে দেখি একটি রাস্তার প্রান্তে একটি বেদি, ইভা পেরনের জন্য একটি শোকস্মারক। মাত্র চার দিন আগে তিনি মারা গেছেন। বেদিতে তার বিশাল পোর্ট্রেট, টেবিল ফুলে ঢাকা, চারজন দণ্ডায়মান প্রহরী। আমি যতই হাঁটি শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এ ধরনের আরও বেদির দেখা পাই। একেকটা একেক ধরনের। মানুষের এই অভাবনীয় আবেগের প্রকাশ দেখে আমি মানুষের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করি, তাদের বেদনার গভীরতা আবিষ্কার করি। কাঁদতে কাঁদতে কেউ বলেছেন, ‘আমাদের লেডি চলে গেছেন।’ বুয়েন্স আইরেস শোকের চাদরে ঢাকা। এখানে আমার ভয়ঙ্কর সময় কেটেছে।
    আমি জীবনেও এতটা হাঁটিনি। উড়োজাহাজে লাগেজ পাঠানো বড্ড ব্যয়বহুল। সুতরাং আমি পাঠাব সড়কপথে। মাল পাঠাতে কাগজ-কলমের অনেক কাজ করতে হয়েছে, সবটার যোগাযোগই পায়ে হেঁটে কুকুরটাকে সঙ্গে নিয়ে। কোনো ট্যাক্সিই আমাদের এখান থেকে ওখানে নিয়ে যাবে না, আর আমি নিয়নকে হোটেলে রেখে যেতেও পারি না, কারণ কাঁদবে, ঘেউ ঘেউ করবে আর তাতে একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। যত দ্রুত সম্ভব আমি কাজ শেষ করতে থাকি। আমার লাগেজ পাঠিয়ে দিলাম। কুকুর পাঠানোর জন্য বেতের বড় একটা খাঁচা কিনলাম। সবশেষে চিলির উড়োজাহাজে উঠলাম।

    নাছোড় এক ভালোবাসা আমাকে চলতে থাকার শান্তি জুগিয়েছে।
    আমার বন্ধুরা এয়ারপোর্টে আমাকে অভ্যর্থনা জানায়। যখন তারা জানল কুকুরের জন্য আমাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে হাসতে শুরু করল। শুল্ক বিভাগে আসার পর সেখানকার কর্মকর্তারা আমাকে বললেন, আমাকে বিকাল ৪টায় আসতে হবে। তখন বাজে কেবল একটা। আরমান্দো পরামর্শ দিল, আমরা এয়ারপোর্টেই লাঞ্চ সেরে নেব। আমি এবং আমার বন্ধুরা যখন আমার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিলাম এয়ারপোর্টের লাউডস্পিকারে শুনলাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এমন একটি খেপাটে কুকুরকে সামলানোর জন্য আমাকে ডাকা হচ্ছে।
    নিয়ন তার খাঁচা ভেঙে ফেলেছে, কেউ তাকে ধরতে পারছে না। উড়োজাহাজের পাগল করা শব্দে নিয়ন খেপাটে হয়ে গেছে। নিয়ন আমার বাহুতে এসে গুটিসুটি মেরে শুয়েছে, কিন্তু কাঁপছে। আমি মেঝেতে বসে তাকে শান্ত করার জন্য আস্তে আস্তে পিঠ চাপড়াতে থাকি।
    আমি কাস্টমস অফিসে কী করেছি সে দৃশ্যের বর্ণনা দিয়ে বহুদিন পরও ব্লাঙ্কা হাসাহাসি করেছে।
    কর্মকর্তারা জানালেন, তারা এর মধ্যেই কুকুরটিকে পাগল ঘোষণা করেছেন এবং কুকুরটিকে হত্যা করতে হবে। তারা আমার কোনো কাগজপত্রই দেখতে চান না।
    একসময় বললেন, ‘তুমি তোমার কুকুর নিয়ে এক্ষণই বেরিয়ে যাও।’

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘৩য় ‘ও অন্যতম ইতিহাস নেরুদা: পর্ব: পাবলো প্রভাবশালী বিশ মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার লেখক শতাব্দীর শিক্ষা শিল্প শ্রেষ্ঠ সাহিত্য
    Related Posts
    ফখরুল

    কিছু কিছু সংগঠন জুলাই আন্দোলনকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করেন: ফখরুল

    October 10, 2025
    নাসীরুদ্দীন

    শাপলা প্রতীক দিতে হবে অন্যথায় ধানের শীষ বাদ দিতে হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

    October 10, 2025
    ইউরোপে পড়াশোনার সুযোগ

    ইউরোপের যে দেশে অল্প খরচে মিলবে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ

    October 9, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Jessica Simpson

    Jessica Simpson’s Daughter Birdie Steals the Show Dressing as Mom for School Spirit Week

    Cubs force Game 5

    Cubs Force Decisive Game 5 With Shutout Victory Over Brewers

    Unlock October 10 NYT Connections with These Hints and Answers

    Unlock October 10 NYT Connections with These Hints and Answers

    shop

    শিশুটির জন্মের সময় একটি সাবানের সমান ওজন ছিল

    Netanyahu Backs Trump for Nobel Peace Prize

    Netanyahu Renews Nobel Prize Push for Trump After Gaza Deal, Shares AI Image

    অপটিক্যাল ইলিউশন

    ছবিটি জুম করে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা শিয়াল আর ঘোড়া খুঁজে বের করুন

    Afgan

    আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি হচ্ছে গাজায়

    সোলজার

    ‘সোলজার’ সিনেমায় শাকিবের সঙ্গী তিশা ও ঐশী

    দলিল

    দলিল থাকা সত্ত্বেও পাঁচ ধরনের জমির দখল ছাড়তে হবে

    Paula Deen weight loss

    Paula Deen’s Dramatic Weight Loss Journey Revealed After Diabetes Diagnosis

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.