মুকিমুল আহসান, বিবিসি নিউজ বাংলা : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নিষ্ক্রিয় আওয়ামী লীগ। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির মাঠে সরব হওয়ার পর দল দুটির মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে।
তৃণমূল থেকে শুরু করে দল দুটির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য ও কথাবার্তায়ও এই মতবিরোধ স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে গত কয়েকদিনে।
যেটি প্রকাশ্যে আসে গত অগাস্টের মাঝামাঝি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন আয়োজনে সময় দেয়া নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে।
শেখ হাসিনার পতনের পর দীর্ঘ ২৫ বছরের রাজনৈতিক মিত্রদের মধ্যে হঠাৎ কেন এমন বৈরি সম্পর্ক তৈরি হলো, সেটি নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।
গত সপ্তাহে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেন না এমন একটি একটি বক্তব্য দিয়েছেন। সেই বক্তব্য নিয়েও বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
যদিও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এ ধরনের প্রতিক্রিয়া থাকলেও বিএনপির সাথে তাদের বোঝাপড়ায় কোনো সংকট নেই।
অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “জামায়াত অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই একটা দল। বিএনপির সাথে জামায়াতের বিরোধের প্রশ্ন আসবে কেন?”
পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে বিরোধ স্পষ্ট
গত তেসরা সেপ্টেম্বর ঢাকায় সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিমিয় সভায় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামীর ওপর আওয়ামী লীগ সরকার যে ‘নির্যাতন’ করেছে তার জন্য প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
জামায়াতের আমিরের এই বক্তব্যের পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় রাজনীতির মাঠে।
যদিও একদিন পরে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, “প্রতিশোধ না নেয়ার মানে হচ্ছে আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধ যিনি করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। শাস্তিও হতে হবে।”
এর আগে ভারতের সাথে সম্পর্ক নিয়ে গত ২৮শে অগাস্ট ঢাকায় সাংবাদিকদের সাথে আলাদা এক অনুষ্ঠানে কথা বলেন জামায়াতের আমির।
সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা সবার সাথে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগী দেশ আমাদের খুবই প্রয়োজন। প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আপনারা বদলানোর চিন্তা করেন কেন।”
জামায়াত আমিরের এসব বক্তব্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয় বিএনপিতে।
গত রোববার সাতক্ষীরায় বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সরাসরি জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ না করলেও তিনি জামায়াত আমিরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “গত কয়েকদিনে দেখেছি কিছু রাজনৈতিক দল একটি প্রতিবেশী দেশের ফাঁদে পা দিয়েছে। সে কারণে তারা বিভ্রান্ত ছড়ায় এরকম কিছু কথাবার্তা বলছে।”
এমন অবস্থায় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকারও আহবান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা তারেক রহমান।
জামায়াত আমিরের এসব বক্তব্যের জবাব দিতে দেখা গেছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকেও।
দু’টি দলের শীর্ষ পর্যায়ে এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের বিষয়টিকে অবশ্য রাজনৈতিক দূরত্ব বলে মনে করছে না জামায়াতে ইসলামী।
দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মি. পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “কেন বিএনপি এ কথা বলছে সে জবাব বিএনপি দেবে। এ দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীর না। আমাদের দিক থেকে আমরা মনে করি আমাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব নাই।”
যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, “অনেক নেতা বক্তব্য দিতে পারে, আমাদের অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকার দরকার হয় না, আমরা আমাদের মতো করে পলিটিক্স করছি।”
নির্বাচন ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থান
গত ৮ই অগাস্ট দায়িত্ব নেয়ার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই ভাষণে জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, কিংবা নির্বাচন কতদিন পর হতে পারে এমন কোনো বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা ছিল না।
যে কারণে এই বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় অসন্তোষ জানান।
মি. আলমগীর যখন এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন তখন ফেনী-নোয়াখালী-কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল।
এমন অবস্থায় বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করে জামায়াতের আমীর মি. রহমান বলেন, “এখনও শত শত মানুষ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। রক্তের দাগ মোছেনি। বন্যায় দেশ আক্রান্ত। এই সময়ে কেউ নির্বাচন নির্বাচন জিকির তুললে জাতি তা গ্রহণ করবে না।”
জামায়াত নেতার এই বক্তব্য ভালভাবে নেয়নি বিএনপি।
পরে এর জবাবে দলটির মহাসচিব মি. আলমগীর বলেন, “যাদের জনসমর্থন নেই, তারা এ ধরনের বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করে, আমি কোনো দলের নাম বলছি না। যাদের ভোটে জয়ের সামর্থ্য নেই, তারাই নির্বাচনের বিরুদ্ধে।”
নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াতের বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মি. পরোয়ার।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বিভিন্ন সংশোধন ও সংস্কারে মিনিমাম একটা সময় লাগবে সরকারের। এজন্য আমরা বলেছি একেবারে অল্প সময় দিলেও তারা পেরে উঠবে না, একটা যৌক্তিক সময় দেয়ার কথাই জামায়াত বলছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে দল দুটির মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।
রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন প্রতিপক্ষ ছিল, তখন বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে একটা জোট ছিল। রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ না থাকায় এখন ভিন্ন সমীকরণে এই মত পার্থক্য থাকা অস্বাভাবিক নয়।”
বিরোধের আরো যে সব কারণ
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা সরে যাচ্ছেন কিংবা সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সে সব জায়গায় নিজস্ব লোকের পদায়ন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এক ধরনের নীরব মনোমালিন্য চলছে বলে জানা যাচ্ছে।
বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ নিয়ে এই জটিলতা দেখা দেয় গত মাসে।
তখন বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলামকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এমন আভাসের ভিত্তিতে অনেকেই তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। এটি নিয়ে সে সময় বেশ বিতর্কও তৈরি হয়।
একটা দলের সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতাকে ভিসি নিয়োগের বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়।
পর তাকে নিয়োগ না দিয়ে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানকে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্যের দলীয় সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও বিএনপির অনেক সমর্থককে এমন ধারণা পোষণ করতে দেখা গেছে যে তিনি জামায়াত সমর্থিত হওয়ার কারণে নিয়োগ পেয়েছেন।
এ নিয়ে বিএনপি সমর্থিত অনেককে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করতেও দেখা গেছে।
রাজনীতি বিশ্লেষক মি. আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রশাসক কিংবা আমলা হিসেবে যোগ্যতা প্রাধান্য দেয়া হলেও কেউ কেউ মনে করে তিনি মনে হয় অমুক দলের। এই বিষয়টি হাস্যকর।”
“এর আগে যারা আওয়ামী লীগের সময় কোণঠাসা হয়েছে। এখন তাদের জামায়াত বলছে কারা?” প্রশ্ন তার।
এছাড়া জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী গুম অবস্থা থেকে ফেরত আসার পর গত সপ্তাহে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি তুললে বিএনপি সমর্থকদের অনেককেই এর কড়া সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
এসব নানা ইস্যুতে দল দুটির মধ্যে গেল এক মাসে দূরত্ব বেড়েছে অনেকটা।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মি. পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বিএনপিসহ যে সব দল ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শক্তির বিরুদ্ধে একসাথে আন্দোলন করেছে, তাদের সাথে রাজনৈতিক বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখনো রয়ে গেছে। আমরা সেই সম্পর্ক মেইনটেন করে যেতে চাই।”
বিএনপি অবশ্য মনে করছে এখন সংকট এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতির নয়। শিগগিরই জাতীয় সরকার গঠন করলে সংকট কেটে যাবে।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, কোন পার্টি কী বলছে সেটা আমাদের ইস্যু না। আমরা সবাই মিলে ৩১ দফা দিছি। সবাই মিলে জাতীয় সরকার হবে। জাতীয় সরকারে সবাই থাকবে।”
ইসলামী দল নিয়ে ঐক্য প্রসঙ্গ
শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগ দেশের রাজনীতিতে কোথাও নেই। এরই মধ্যে দলীয় প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কেউ কেউ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারের পর জেলেও আছেন।
দলীয় কার্যালয়, মাঠের রাজনীতি কিংবা কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডই নেই দলটির।
এমন অবস্থায় ইসলামী ও সমমনা দলগুলো নিয়ে একটি বৃহত্তর জোট গঠনের উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
বৃহৎ জোট গঠনে আলোচনা শুরু হয় গত ১৮ই অগাস্ট জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে কওমি মাদরাসাভিত্তিক কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে।
এতদিন ইসলামী দলগুলোর নিজেদের মধ্যে মতের ভিন্নতা থাকলেও এই প্রথম সব বড় ইসলামী দলগুলো এক হতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
চূড়ান্ত ঐক্যমতে পৌঁছালে তখন জোটবদ্ধভাবে সব ইসলামী দল নির্বাচন করবে বলে মনে করছে জামায়াত।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল মি. পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ইসলামী দলগুলো একসাথে নির্বাচন করবে বলে আমরা আশাবাদী। সকল ইসলামী দলের মধ্যে একটা ঐক্যের আকুতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অতীতে যে আগ্রহ কখনো দেখা যায়নি।”
বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “এতদিন আওয়ামী লীগ মাঠে থাকা অবস্থায় বিএনপির যারা ভোট ব্যাংক ছিল, সেখানে জামায়াত হাত দিচ্ছে। ইসলামী দলগুলো নিয়ে জামায়াতের ঐক্য হলে বিএনপির সাথে তাদের রাজনৈতিক বোঝাপড়ার প্রশ্ন চলে আসবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসলামী দলগুলোর সাথে জামায়াতের এই ঐক্যের বিষয়টিও দুই দলের মধ্যে টানাপোড়েনের আরেকটা অন্যতম কারণ।
যদিও এখনো সেটি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছে না।
বিএনপি জামায়াত সম্পর্কের আড়াই দশক
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ যখন প্রথম ক্ষমতায় আসে তখন থেকে থেকেই আওয়ামী লীগের সাথে বেশ বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় জামায়াতের।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়, বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে ১৯৯৯ সালে জোট বাঁধে জামায়াতে ইসলাম।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় ঐক্যজোট রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসার পর থেকেবিভিন্ন ইস্যুতে দল দুটির মধ্যে কিছু টানাপোড়েন তৈরি হলেও জোট নিয়ে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হয়নি।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এক সাথে অংশ নেয় দল দুটি।
২০০৯ থেকে ২০২৪ একটানা সাড়ে পনেরো বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করেছে।
যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে জামায়াতের শুধু না বিএনপিরও এক নেতার ফাঁসি হয়েছে। ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গৃহবন্দি ছিলেন।
এই সময় জামায়াত বিএনপির মধ্যে নানা সংকট হলেও রাজনৈতিক জোট ছিল দুই বছর আগ পর্যন্ত।
এমনকি নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও জামায়াতের প্রার্থীরা ভোটে অংশ নিয়েছিল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে।
২০২২ সালে দু’দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনে শুরু করে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে গত পহেলা অগাস্ট জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ সরকার।
পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরই সশস্ত্র বাহিনীর সাথে বৈঠক, নতুন সরকার গঠন প্রক্রিয়া কিংবা শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান সব জায়গায় বিএনপি ও জামায়াত একসাথেই অংশ নিয়েছে।
তাদের সাথে ছিল গত পনোরো বছরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে থাকা অন্য আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলও। কিন্তু এক মাসের মাথায় নানা ইস্যুতে দল দুটির মতবিরোধ রাজনীতির মাঠে আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।