পাসওয়ার্ড কি?
১৯৬৫ সালে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি বা এমআইটি নামক প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক পাসওয়ার্ড আবিষ্কার করেন। মূলত তাদের পাসওয়ার্ড আবিষ্কারের পেছনের উদ্দেশ্য ছিল নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কম্পিউটার ব্যবহার করে অন্যজনকে সুযোগ করে দেওয়ার। অর্থাৎ সে সময় যে কোন স্থান থেকে টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে কম্পিউটার ব্যবহার করা যেত। যাকে টাইম শেয়ারিং সিস্টেম বলা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য একটি ইউজার নম্বর দেওয়া হত যাকে সে সময় প্রবলেম নম্বর বলা হত। টাইম শেয়ারিং সিস্টেমের মাধ্যমে পাসওয়ার্ড ইউজ করে শুধু নির্দিষ্ট সময় কম্পিউটার ইউজ করা যেত।
যা থেকে ধীরে ধীরে ডাটা এবং সিস্টেম সিকিউর রাখার জন্য পাসওয়ার্ড ধারণা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হতে থাকে। এর পরিপেক্ষিতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের পণ্য এবং সেবা আরও উন্নত করার জন্য পাসওয়ার্ড সিস্টেম ব্যবহার করা শুরু করে। আর আজকের দিনে আমাদের সব কিছুর দায়িত্ব থাকে পাসওয়ার্ড নামক একটি সিস্টেমের কাছে। যা চুরি হয়ে গেলে আমাদের টাকা পয়সা, মান সন্মান সব কিছুই অন্যের হাতে চলে যায়। যাইহোক, পাসওয়ার্ড তৈরির মূল উদ্দেশ্য হলো নিজস্ব আইডেন্টিটির সিকিউরিটি রক্ষা করা।
পাসওয়ার্ড হ্যাকিং কি?
আমরা জানি পাসওয়ার্ড একটি অ্যাকাউন্টের সিকিউরিটি নিশ্চিত করে। অনলাইন দুনিয়ায় আপনি কে সে হিসেবে কিন্তু সিস্টেম আপনাকে চেনে না। সে চেনে আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দ্বারা। আপনি ভুল তথ্য ইনপুট দিলে সিস্টেম কখনো আপনাকে তার অ্যাক্সেস দেবে না। কিন্তু সঠিক ইনপুট দিলে আপনি যদি আসল মালিক না হন তারপরেও আপনাকে অ্যাক্সেস দেবে।
হ্যাকিং কি? হ্যাকিং কত প্রকার?
অর্থাৎ আপনার অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস নেওয়ার জন্য অন্য কেউ যদি আপনার অজান্তে আপনার দেয়া পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তাহলে তা পাসওয়ার্ড হ্যাকিং। সহজ করে বলতে গেলে আপনার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অন্য কেউ যদি সিস্টেম অ্যাক্সেস নিয়ে নেয় তাহলে আপনি পাসওয়ার্ড হ্যাকিং এর শিকার হয়েছেন।
বর্তমান সময়ে পাসওয়ার্ড হ্যাকিং বিষয়টা অনেক প্রচলিত। এর কারণে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ফিনান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট, ডিভাইস পাসওয়ার্ড সহ সকল ক্ষেত্রেই পাসওয়ার্ড হ্যাকের ঝুঁকি থেকেই যায়। কিভাবে পাসওয়ার্ড হ্যাক হয় তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়েছে কি না যেভাবে বুঝবেন
গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড হ্যাক হলে বিপদে পড়তে পারেন। আর এই কারণে ক্রোম ব্রাউজারে সুরক্ষার অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর নিয়ে এসেছে গুগল। এই জন্য ব্রাউজারের মধ্যেই রয়েছে পাসওয়ার্ড চেকার টুল। সেখানে ব্রাউজারে সেভ থাকা পাসওয়ার্ডগুলো কোথাও ফাঁস হয়েছে কি না জানা সম্ভব।
এখানে যেসব পাসওয়ার্ড শুধুমাত্র গুগল ক্রোম ব্রাউজারে করা হয়েছে সেই পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়েছে কি না জানা যাবে এই লেখা থেকে।
পাসওয়ার্ড চেকার শুধুমাত্র আপনার সেভ থাকা পাসওয়ার্ডের সুরক্ষা যাচাই করে না, বরং কীভাবে আরও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেখানে দেওয়া সম্ভব তার তথ্যও দেয়।
কীভাবে ক্রোম ব্রাউজারে এই ফিচার ব্যবহার করবেন বুঝতে পারছেন না? দেখে নিন সেই উপায়।
কী কী প্রয়োজন?
গুগল ক্রোম ব্রাউজার লেটেস্ট ভার্সনে আপডেট করুন। এর পরে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
স্টেপ ১। গুগল ক্রোম ওপেন করে সেটিংস খুলে ফেলুন।
স্টেপ ২। এবার অটোফিল অপশনে ক্লিক করে চুজ পাসওয়ার্ড অপশন সিলেক্ট করুন।
স্টেপ ৩। এবার পাসওয়ার্ড অপশন সিলেক্ট করুন।
এবার আপনার ব্রাউজারে সেভ থাকা সব পাসওয়ার্ড স্ক্যান শুরু করবে গুগল ক্রোম। এর মধ্যে কোন কম শক্তিশালী পাসওয়ার্ড থাকলে তা জানিয়ে দেবে আপনার ব্রাউজার। এছাড়াও কোন পাসওয়ার্ড যদি হ্যাকারদের হাতে পৌঁছে গিয়ে থাকেও তাও জানা যাবে এখান থেকেই। যে সব পাসওয়ার্ড কম শক্তিশালী ও যে সব পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের হাতে পৌঁছে গিয়েছে সেই সব পাসওয়ার্ড দ্রুত পরিবর্তন করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে শক্তিশালী নতুন পাসওয়ার্ড সেট করার সময় অক্ষর, সংখ্যা ও স্পেশাল ক্যারেকটারের সমন্বয় ব্যবহার করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও একাধিক অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করাই ভালো। টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন এনেবেল করার সুযোগ থাকলে সুরক্ষার এই অতিরিক্ত স্তর ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন সাইবার সুরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।